
ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপপুঞ্জে প্রাচীন মানুষের বসতি কিভাবে এত আগে গড়ে উঠল—এ প্রশ্ন বহুদিন ধরেই বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কেন্দ্রে ছিল। তবে এবার সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে সহায়তা করছে নতুন এক চাঞ্চল্যকর আবিষ্কার।
ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া ও তিমোর-লেস্টের প্রত্নতাত্ত্বিক খননে মিলেছে ৪০ হাজার বছর আগের পাথরের তৈরি যন্ত্রপাতি, যা আধুনিক গবেষণায় জানাচ্ছে—এই অঞ্চলের মানুষ তখনই দক্ষতার সঙ্গে নৌকা তৈরি এবং গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে পারত!
👉 পাথরের যন্ত্রে মিলল রশি তৈরির প্রমাণ
Ateneo de Manila University-এর গবেষকরা জানিয়েছেন, পাথরের সরঞ্জামগুলোতে এমন চিহ্ন পাওয়া গেছে যা প্রমাণ করে, সেগুলো দিয়ে গাছের আঁশ ও লতাপাতা প্রক্রিয়াজাত করে রশি, জাল ও বাঁধন তৈরির কাজ হতো—যেগুলো নৌকা বানানো ও মাছ ধরার জন্য অপরিহার্য।
👉 মাছের হাড় ও হুকের সন্ধানে মিলল সমুদ্রযাত্রার ছাপ
প্রত্নতাত্ত্বিকরা সেখানে মাছ ধরার হুক, নেটের ওজন, এবং টুনা ও হাঙরের মতো গভীর সমুদ্রের শিকার মাছের হাড় খুঁজে পেয়েছেন। এসবই ইঙ্গিত দেয় যে, তারা শুধুই ভেসে চলা যাত্রী নয়, বরং দক্ষ নাবিক ছিল, যারা সাগরের ঋতুচক্র ও মাছের গমনপথ জানত।
👉 ইউরোপ-আফ্রিকার তুলনায় অনেক আগেই প্রযুক্তিতে এগিয়ে
গবেষণাটি Journal of Archaeological Science-এ প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এতদিন যে ধারণা ছিল—প্রাচীন প্রযুক্তি ইউরোপ ও আফ্রিকাকেন্দ্রিক ছিল—তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। বরং, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই অঞ্চল ছিল সেই সময়কার প্রযুক্তিগত এক 'হাব'।
🗣️ গবেষকদের বক্তব্য:
“এই আবিষ্কার প্রমাণ করে, প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফিলিপাইন ও আশেপাশের অঞ্চলে নৌযান নির্মাণ ও সমুদ্রযাত্রার দক্ষতা ছিল, যা সেই সময়ের যেকোনো সভ্যতার চেয়ে উন্নত,”—বলেন গবেষক দল।
🔍 কেন গুরুত্বপূর্ণ এই আবিষ্কার?
– এটি দেখায় যে প্রাচীন মানুষ শুধু স্রোতে ভেসে নয়, বরং উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে গভীর সাগর পাড়ি দিয়ে দ্বীপে পৌঁছাত।
– স্থানীয় উদ্ভিদের আঁশ দিয়ে তৈরি রশি ব্যবহার হতো নৌকা ও জাল তৈরিতে, যা আধুনিক নৌপ্রযুক্তির পূর্বসূরি।
– এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষের উদ্ভাবনী শক্তির এক ঐতিহাসিক দলিল।
আঁখি