
ছবিঃ সংগৃহীত
লিভার মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এটি শরীরের ভেতরে জমে থাকা দূষিত পদার্থ ও টক্সিন ছেঁকে ফেলার কাজ করে, যেন রক্ত বিশুদ্ধ থাকে। এই লিভার যদি দীর্ঘসময় অতিরিক্ত চাপের মধ্যে থাকে বা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়, তবে তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়। আর ঠিক তখনই শরীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংকেত দিতে শুরু করে।
বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মনোজিত মণ্ডল জানিয়েছেন, লিভার আক্রান্ত হওয়ার আগে শরীরে চারটি মূল লক্ষণ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেতে শুরু করে। লক্ষণগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিলে বড় কোনো বিপদ এড়ানো সম্ভব।
প্রাথমিক ৪টি লক্ষণ
১. পেটের ওপরের দিকে ব্যথা: পেটের উপরের ডান পাশ বা মধ্যভাগে চাপভাব বা ব্যথা অনুভব হতে পারে।
২. বমি বমি ভাব: ক্রমাগত বমি আসার মতো অনুভূতি থাকতে পারে, যা খাওয়ায় অনীহা তৈরি করে।
৩. ক্ষুধামান্দ্য: খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে, বিশেষ করে তেল-মসলাযুক্ত বা ভারী খাবারে।
৪. শারীরিক দুর্বলতা: সবসময় ক্লান্তি লাগা, ঝিমঝিম ভাব এবং কাজকর্মে অক্ষমতা অনুভূত হয়।
ডা. মণ্ডলের মতে, এই উপসর্গগুলো দেখা দিলেই দেরি না করে নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং প্রয়োজন অনুযায়ী লিভারের কার্যকারিতা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
লিভার রোগ গুরুতর হলে যেসব লক্ষণ দেখা দেয়
যদি সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে লিভারের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে এবং নিচের জটিল উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে:
-
জন্ডিস: চোখ ও ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া
-
ঘন রঙের প্রস্রাব ও হালকা রঙের মল
-
ওজন হ্রাস, পা বা পেট ফোলা
-
চুলকানি, হাত-পায়ে কাঁপুনি
-
মনোজাগতিক অস্থিরতা ও রক্তক্ষরণ
প্রতিরোধ ও সচেতনতামূলক করণীয়
-
হেপাটাইটিস A ও B-এর টিকা গ্রহণ করুন
-
ব্যক্তিগত ও খাদ্য-সচেতনতা বজায় রাখুন
-
হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
-
অ্যালকোহল ও অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
-
পানীয় জল ও কাঁচা খাবার গ্রহণে সতর্ক থাকুন
পরামর্শ: লিভার রোগ কখনো একদিনে হয় না, এটি ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। তাই প্রাথমিক লক্ষণগুলোকে অবহেলা না করে সচেতন হোন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান।
ইমরান