ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সাতঘরিয়া থেকে সাতক্ষীরা: নামের অন্তর্নিহিত ইতিহাস ও ঐতিহ্য

মহাসিন কবির, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ০৮:১৬, ৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৮:১৭, ৪ জুন ২০২৫

সাতঘরিয়া থেকে সাতক্ষীরা: নামের অন্তর্নিহিত ইতিহাস ও ঐতিহ্য

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলা, যার নামের পেছনে রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।

বুড়ন দ্বীপ থেকে সাতঘরিয়া:

প্রাচীনকালে সাতক্ষীরা অঞ্চল "বুড়ন দ্বীপ" নামে পরিচিত ছিল। ১৭৭২ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময়, নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কর্মচারী বিষ্ণুরাম চক্রবর্তী নিলামে বুড়ন পরগণা কিনে সাতঘরিয়া গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তার পুত্র প্রাণনাথ চক্রবর্তী সাতঘরিয়া অঞ্চলে উন্নয়ন কাজ করে এলাকাটিকে সুপরিচিত করেন।

সাতঘরিয়া থেকে সাতক্ষীরা:

১৮৬১ সালে সাতঘরিয়ায় মহকুমা কার্যালয় স্থানান্তরিত হলে, ইংরেজ কর্মকর্তারা গ্রামটির নাম উচ্চারণে "সাতঘরিয়া" থেকে "সাতক্ষীরা" উচ্চারণ করতে শুরু করেন। এই নামই পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সাতক্ষীরা নামে পরিচিতি লাভ করে।

বিকল্প মতবাদ:

সাতক্ষীরা নামকরণের বিষয়ে আরও কিছু লোককথা প্রচলিত আছে। একটি মতে, সাতজন ঋষি একবার সমুদ্রযাত্রায় এসে ক্ষীর রান্না করেন এবং খাওয়ার পর সেই স্থানকে "সাতক্ষীরা" নামে অভিহিত করা হয়। আরেকটি মতে, সাতটি বিখ্যাত পণ্যের নামানুসারে জেলার নামকরণ হয়েছে, যেমন: উল, ঘোল, কুল, সন্দেশ, মাছ, আম ও গাছের চারা।

সাতক্ষীরা জেলার নামকরণ শুধুমাত্র একটি নাম নয়, এটি একটি ইতিহাসের ধারক। বুড়ন দ্বীপ থেকে সাতঘরিয়া, এবং তারপর সাতক্ষীরা—প্রতিটি নামের পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে একটি গল্প, একটি ঐতিহ্য। এই ইতিহাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, প্রতিটি স্থান, প্রতিটি নামের পেছনে লুকিয়ে থাকে একটি সমৃদ্ধ অতীত।

নোভা

×