
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে অর্থ বিত্তের বৈষম্য যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে কোটিপতি ও বিলিয়নিয়ারের সংখ্যাও। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ কয়েকটি দেশ ধনী শ্রেণির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। ২০২৫ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মতো ৩ হাজারের বেশি বিলিয়নিয়ার তালিকাভুক্ত হয়েছেন, যাদের সম্মিলিত সম্পদ ছাড়িয়ে গেছে অধিকাংশ দেশের জিডিপি।
ফোর্বস প্রকাশিত ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ডস বিলিয়নিয়ার্স লিস্ট অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বে ৩,০২৮ জন ব্যক্তি বিলিয়নিয়ারের মর্যাদা ধারণ করছেন। তাদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৬.১ ট্রিলিয়ন ডলার—যা ২০২৪ সালের তুলনায় ২ ট্রিলিয়ন বেশি।
এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি বিলিয়নিয়ার—৯০২ জন। চীন ও হংকংয়ে আছেন ৫১৬ জন। ২০৫ জন বিলিয়নিয়ারের আবাসস্থল হিসেবে ভারতের অবস্থান তৃতীয়।
বিশ্বে মাত্র তিনজন ব্যক্তির সম্পদের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তারা হলেন— এলন মাস্ক: ৩৪২ বিলিয়ন ডলার (ফিনল্যান্ডের জিডিপির সমান), মার্ক জাকারবার্গ: ২১৬ বিলিয়ন ডলার (আলজেরিয়ার জিডিপি ছাড়িয়ে), জেফ বেজোস: ২১৫ বিলিয়ন ডলার (হাঙ্গেরির অর্থনীতির চেয়ে বড়)।
বিলিয়নিয়াররা যতই আলোচনায় থাকুন, বিশ্বে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যাই বেশি। প্রায় ৫ কোটি ৮০ লাখ মানুষ এখন মিলিয়ন ডলারের মালিক। এটি বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ১.৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্র একাই ২ কোটি ২০ লাখ মিলিয়নিয়ারের ঠিকানা যা বিশ্বের মোট মিলিয়নিয়ারের ৩৮%। অর্থাৎ প্রতি ৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানের মধ্যে ১ জন মিলিয়নিয়ার। চীন রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে (৬ মিলিয়নেরও বেশি মিলিয়নিয়ার), এরপর যুক্তরাজ্য।
বিশ্বে সবচেয়ে ঘন কোটিপতির দেশ হলো সুইজারল্যান্ড—প্রতি ১০০ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ১২ জনের সম্পদ ১ মিলিয়ন ডলারের বেশি। দেশটির স্থিতিশীল অর্থনীতি, উচ্চ জীবনমান ও কর নীতিই এই সাফল্যের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
২০২৮ সালের মধ্যে ৫৬টি দেশের ভিতর ৫২টিতে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাইওয়ানে এই হার হবে প্রায় ৫০% বৃদ্ধি। মধ্যপ্রাচ্যের কাতার, মধ্য এশিয়ার কাজাখস্তান—এসব দেশেও ধনীদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
প্রযুক্তি, ফিনান্স, রিয়েল এস্টেট ও স্বাস্থ্য খাত এখনো ধনীদের সবচেয়ে বড় জোগানদাতা। তবে নতুন সংযোজন হলো ‘ক্রিয়েটর ইকোনমি’—যেখানে ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, আমাজনের মতো প্ল্যাটফর্মে কনটেন্ট বানিয়ে অনেকেই কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন।
বিশেষ করে মিলেনিয়াল ও জেন-জেড প্রজন্ম তাদের সৃজনশীলতা থেকেই অর্থ কামাচ্ছেন। ২০২২ সালে এই অর্থনীতির পরিমাণ ছিল ২৫০ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৭ সালের মধ্যে প্রায় দ্বিগুণ হবে।
মুমু