
সংগৃহীত
মাইগ্রেন একটি সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক স্নায়বিক সমস্যা। বাংলাদেশে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হলেও অনেকেই জানেন না, মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে কিছু সহজ জীবনধারা পরিবর্তনই হতে পারে কার্যকর প্রতিকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাইগ্রেনের সময় ও আগে পরে কিছু অভ্যাস ব্যথাকে আরও তীব্র করে তোলে। এসব অভ্যাস সম্পর্কে সচেতন হলে ও এগুলো এড়িয়ে চললে অনেকাংশে মাইগ্রেনের আক্রমণ ঠেকানো সম্ভব।
চলুন জেনে নিই এমন ১২টি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস ও আচরণ, যেগুলো এড়িয়ে চলা উচিত মাইগ্রেনের সময়:
তীব্র আলো
- তীব্র রোদ বা কৃত্রিম আলো মাইগ্রেনের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সময় সানগ্লাস ব্যবহার, পর্দা টানা ও স্ক্রিনে নাইট মোড অন করাই সবচেয়ে ভালো।
উচ্চ শব্দ
- কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ, উচ্চ শব্দের গান বা গাড়ির হর্ন মাইগ্রেন বাড়িয়ে দিতে পারে। এ অবস্থায় শান্ত, নীরব পরিবেশে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
স্ক্রিনে দীর্ঘসময় তাকিয়ে থাক
- ল্যাপটপ, মোবাইল বা টিভি স্ক্রিনে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখ ও মাথায় চাপ পড়ে, যা মাইগ্রেনের উপসর্গ বাড়িয়ে দেয়। প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ২০ সেকেন্ড চোখ বিশ্রাম দেওয়া জরুরি।
মানসিক চাপ
- মানসিক চাপ মাইগ্রেনের অন্যতম ট্রিগার। স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন, হালকা ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
নির্দিষ্ট খাবার
- চকলেট, চিজ, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ড্রাই ফ্রুটস ও অ্যালকোহল অনেকের মাইগ্রেন বাড়ায়। খাবার খাওয়ার পর কোনটি সমস্যা তৈরি করছে তা বুঝে খাবার বাছাই করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ঘুমের অনিয়ম
- ঘুমের ঘাটতি বা অতিরিক্ত ঘুম দুই-ই মাইগ্রেন বাড়াতে পারে। তাই নিয়মিত ঘুমের সময় বজায় রাখা জরুরি।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা
- একটানা বসে থাকলে মাথায় রক্ত চলাচলে প্রভাব পড়ে, যা মাইগ্রেন বাড়াতে পারে। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
অতিরিক্ত ক্যাফেইন
- চা-কফির অতিরিক্ত সেবনে মাইগ্রেন তীব্র হতে পারে। দিনে ১ কাপের বেশি গ্রহণ না করাই উত্তম।
না খেয়ে থাকা
- অনেকেই ব্যস্ততার কারণে নাস্তা বাদ দেন, যা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে মাইগ্রেন শুরু করতে পারে। সময়মতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম
- হঠাৎ ভারী ব্যায়াম বা অতিরিক্ত কসরতেও মাইগ্রেন শুরু হতে পারে। তাই হালকা ব্যায়ামে সীমিত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তন
- গরম থেকে হঠাৎ ঠান্ডা পরিবেশে যাওয়া বা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল মাইগ্রেন বাড়াতে পারে। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা পরিবর্তনের অভ্যাস করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ওষুধ সেবনে সতর্কতা
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত ব্যথানাশক সেবনে উপকারের বদলে ক্ষতি হতে পারে। এতে ওষুধে সহ্যশক্তি তৈরি হয় এবং ব্যথা নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
চিকিৎসকরা বলছেন, মাইগ্রেন ব্যবস্থাপনায় সঠিক ঘুম, মানসিক প্রশান্তি, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং পরিমিত প্রযুক্তি ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। প্রয়োজনে নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হ্যাপী