
ছবি: সংগৃহীত
ফুসফুস আমাদের দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা প্রতিনিয়ত অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন ডাই-অক্সাইড ত্যাগের মাধ্যমে শরীরকে জীবিত রাখে। তবে দূষণ, ধূমপান ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে বর্তমানে ফুসফুস-সংক্রান্ত রোগ, যেমন অ্যাজমা, সিওপিডি, ও ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সচেতন অভ্যাস গড়ে তুললেই ফুসফুসকে সুস্থ ও কার্যকর রাখা সম্ভব।
১. ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য সম্পূর্ণরূপে পরিহার করুন
ধূমপান ফুসফুসের সবচেয়ে বড় শত্রু। এতে উপস্থিত টক্সিক রাসায়নিক পদার্থ ধীরে ধীরে ফুসফুসের কোষ নষ্ট করে দেয় এবং ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ায়। শুধুমাত্র ধূমপান নয়, পরোক্ষ ধূমপানও সমান ক্ষতিকর। তাই ধূমপান থেকে নিজে দূরে থাকা এবং ধূমপায়ী পরিবেশ এড়িয়ে চলা জরুরি।
২. পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ বায়ুর নিশ্চয়তা
বায়ুদূষণ ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে বাইরের ধোঁয়া, ধুলা, যানবাহনের ধোঁয়া থেকে বাঁচার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। বাসার ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, নিয়মিত জানালা খোলা রাখা এবং প্রয়োজনে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়।
৩. শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম ও যোগচর্চা
প্রতিদিন কয়েক মিনিট ধীর ও গভীর শ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম করলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে। ‘প্রণায়াম’ বা ‘ডিপ ব্রিদিং’ প্র্যাকটিস করলে অক্সিজেন গ্রহণ বাড়ে ও ফুসফুসের পেশি আরও শক্তিশালী হয়। এতে শ্বাসকষ্ট কমে এবং ফুসফুস দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
৪. পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
ফুসফুসের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে ভিটামিন C, E, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। আপেল, গাজর, রসুন, ব্রকলি, আদা ও বাদাম জাতীয় খাবার ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে সহায়ক। পানি বেশি পান করাও অত্যন্ত জরুরি।
৫. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও টিকা গ্রহণ
ফুসফুসের রোগ প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা কঠিন হতে পারে। তাই নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া, এক্স-রে বা স্পাইরোমেট্রি টেস্ট করানো উচিত, বিশেষ করে যারা ধূমপায়ী বা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন। এছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও কোভিড-১৯ এর মতো রোগ প্রতিরোধে টিকা গ্রহণ ফুসফুসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
ফুসফুস সুস্থ থাকলে শরীর ও মন থাকে চঞ্চল। এ জন্য ওষুধ নয়, চাই সচেতনতা ও নিয়মিত অভ্যাস। উপরের ৫টি চাবিকাঠি অনুসরণ করলেই আপনি পেতে পারেন এক গভীর নিশ্বাসে প্রশান্তি ও সুস্থ জীবনের নিশ্চয়তা।
ফারুক