ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা মোকাবিলায় সফলতা অর্জন করায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ২০:৩৩, ১৪ মার্চ ২০২৩

করোনা মোকাবিলায় সফলতা অর্জন করায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সংবর্ধনা

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিশ্বের রোল মডেল হওয়াটা কোনো ম্যাজিকের মাধ্যমে হয়নি। এই মোকাবিলা হয়েছে বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও পরিশ্রমের মাধ্যমে। করোনা মোকাবিলা ছিল প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতা ও দুরদর্শিতার ফসল। এ সময় তিনি টাকার চিন্তা না করে মানুষের জীবনের কথা চিন্তা করেছেন।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) কর্তৃক করোনা মোকাবিলায় সফলতার জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে বিশ্বের ১০০ বছরের ইতিহাসে কোভিড মহামারি নিয়ন্ত্রণে সফলতা অর্জন, ভ্যাকসিন সংগ্রহ, বিতরণ ও প্রয়োগে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক কে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেক্টরের পক্ষ হতে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান। 

এ সময় করোনায় অবদান রাখায় বেসরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ও ১০ জন ব্যক্তিকে ‘কোভিড হিরো’ হিসেবে আখ্যায়িত করে পুরষ্কৃত করা হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় সাফল্য লাভ গোটা জাতির জন্যই একটি বিশেষ অর্জন ও সফলতা। এই সফলতায় সব থেকে বেশি অবদান রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি সময়োপযোগী দিক নির্দেশনা ও কর্ম পরিকল্পনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে সার্বিক দায়িত্ব কাধে তুলে নিয়ে এই মহামারিতে সম্মুখে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা কেবল তার নির্দেশনা মেনে কাজগুলো করে গেছি। আমরা স্বাস্থ্যখাতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যখন যা কিছু চেয়েছি তিনি আমাদেরকে সেগুলো দিতে এক মুহূর্তও বিলম্ব করেন নাই।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী টাকার চিন্তা করেননি, তিনি মানুষের জীবনের চিন্তা আগে করেছেন। করোনা মোকাবিলায় আমরা আজ বিশ্বের পঞ্চম স্থান পেয়েছি, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এই কৃতিত্ব আমাদের প্রধানমন্ত্রীর। তার নির্দেশনা অনুযায়ী ঠিকভাবে কাজ করায় আমরা আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছি। আজ আমাকে যেভাবে সংবর্ধনা দেয়া হলো এটি আমি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) গোটা চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পক্ষে গ্রহণ করে সম্মানিত বোধ করছি। এর মাধ্যমে গোটা চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যখাতকে যেভাবে সম্মান দেয়া হল সেজন্য আমি বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

করোনার সময়ে দেশের বেসরকারি স্বাস্থ্যখাত একযোগে নির্দেশনা মেনে কাজ করেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার সময় দেশে বিদেশে সব মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত ছিল। শুরুতে মানুষ কোন এলাকায় হাসপাতাল করতে দিতেন না। মানুষ করোনার ভয়ে সে সময় করোনা হাসপাতাল করার বিপক্ষে আন্দোলন পর্যন্ত করেছেন। সে সময় দেশের প্রাইভেট মেডিকেল হাসপাতালগুলো সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমরা প্রাইভেটখাতকে বলেছিলাম করোনার জন্য হাসপতাল ডেডিকেটেড করতে, তারা সেটি মেনে নিয়েছে। তাদের যখন যা বলেছি তারা তাই করেছে। এসব কারনে করোনা মোকাবিলায় আমাদের কাজগুলো আরও সহজ হয়েছে।’

তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যখন ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা করছে তখন বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ তা বিনামূল্যে পেয়েছেন। বাংলাদেশে একদিনে এক কোটি ২০ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়ে বিশ্বে বিরল রেকর্ড করেছে। যখন আমেরিকা ও ইটালিতে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু হার ক্রমান্বয়ে বেড়ে ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হয় তখন বাংলাদেশে আক্রান্তের হার বাড়লেও এক পর্যায়ে সেটি নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। ২০২০ সালের জুনের শেষে এবং জুলাইয়ে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু হার কিছুটা বাড়তে থাকে, পরে সেটিও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশনে সভাপতি এম এম মুবিন খানের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যলয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

এমএইচ

×