ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

একদিনের ছুটিতেই মুছে যাবে স্ট্রেস, যেতে হবে যে জায়গায়!

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ২২ মে ২০২৫; আপডেট: ২২:০৫, ২২ মে ২০২৫

একদিনের ছুটিতেই মুছে যাবে স্ট্রেস, যেতে হবে যে জায়গায়!

কখনও কি ইচ্ছে করে শহরের কোলাহল থেকে পালিয়ে কোথাও একটু নিঃশ্বাস নিতে? চারদিকে কেবল ইট-পাথরের দেয়াল, তীব্র যানজট আর কাজের চাপ—এই যেন ঢাকাবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। এমন এক নিঃশ্বাসে প্রশান্তি এনে দিতে পারে ঢাকার খুব কাছেই সবুজে মোড়া এক টুকরো স্বপ্ন-গ্রাম ‘জিন্দা পার্ক’। পরিবারের সঙ্গে, প্রিয়জনের হাত ধরে বা বন্ধুদের হাসিতে ভরপুর একটা দিন কাটানোর জন্য আদর্শ এক জায়গা হতে পারে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত এই পার্কটি। একদিনেই ঘুরে আসা যায় এমন এই গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে আপনার ছুটির দিনের সবচেয়ে শান্তিময় অভিজ্ঞতা।

সপ্তাহের পর সপ্তাহ একঘেয়ে শহুরে জীবনের ধুলোবালি আর যান্ত্রিক শব্দে ক্লান্ত হয়ে পড়া ঢাকাবাসীর জন্য ‘জিন্দা পার্ক’ এখন অনেকটাই আশার আলো। ঢাকার খুব কাছেই এমন একটি জায়গা, যেখানে সকাল বেলা গিয়ে বিকালের আগেই ফিরে আসা যায়—এবং তাতে মনও ভরে যায়, ক্যামেরাও।

ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে ৩০০ ফিট সড়ক দিয়ে যেতে হবে রূপগঞ্জের কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত। সেখান থেকে অটোরিকশায় ১০-১৫ মিনিটেই পৌঁছে যাবেন সবুজে ঘেরা সেই জিন্দা গ্রামে।

জিন্দা পার্কটি প্রায় ১০০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত, যেখানে রয়েছে ২৫০ প্রজাতির ১০ হাজারের বেশি গাছ, ৫টি ছোট-বড় লেক, ভাসমান সেতু, গাছের উপর বানানো টংঘর, বাঁশের টি-হাউস, কমিউনিটি স্কুল, মসজিদ, লাইব্রেরি, ক্লিনিক, এমনকি ঈদগাহ ও কবরস্থান পর্যন্ত। এক কথায়, এটি যেন একটি ‘আদর্শ গ্রাম’।

 

কী দেখবেন:

জিন্দা পার্কে প্রবেশ করলেই আপনাকে স্বাগত জানাবে ঘন সবুজ বৃক্ষরাজি ও প্রাকৃতিক প্রশান্তির অনুভব। লেকের জলে প্রতিফলিত সূর্যের আলো, পাখির কলকাকলি আর হাওয়ায় দুলে ওঠা গাছের পাতার শব্দ যেন এক নিমেষে ভুলিয়ে দেয় শহরের কোলাহল।

লেকের উপর ভাসমান ড্রামের তৈরি ব্রিজে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা কিংবা লেকপাড়ে ঘাসে বসে গল্প করা—সবই যেন স্মৃতির পাতায় রঙ ছড়িয়ে দেয়। চাইলে নৌকা ভ্রমণের মজাও নিতে পারবেন মাত্র ২০০ টাকায়। আর গাছের উপর তৈরি টংঘরে উঠে উপভোগ করতে পারেন নিভৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

 

খাবার ও অন্যান্য সুবিধা:

জিন্দা পার্কে চাইলে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে প্রবেশমূল্য একটু বেশি—১২৫ টাকা। সাধারণ প্রবেশ মূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০০ টাকা ও শিশুদের জন্য ৫০ টাকা। লাইব্রেরিতে প্রবেশের জন্য আলাদা ১০ টাকা দিতে হয়। পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধব মিলে ছোট পিকনিকের ব্যবস্থাও করা যায়—পূর্বে জানালে কর্তৃপক্ষ খাবারের ব্যবস্থাও করে দেয়।

 

যেভাবে যাবেন:

* কুড়িল বিশ্বরোড → ৩০০ ফিট সড়ক → কাঞ্চন ব্রিজ → অটো রিকশা → জিন্দা পার্ক

* বিকল্পভাবে, মীরের বাজার বাইপাস, কাঁচপুর ব্রিজ, ভুলতা গাউছিয়া দিয়েও যাওয়া যায়।

 

টিপস ও সতর্কতা:

পার্কের পরিবেশ রক্ষায় ময়লা না ফেলা, উচ্চস্বরে গান না বাজানো এবং ভ্রমণকালীন দায়িত্বশীল আচরণ করা প্রত্যেক ভ্রমণকারীর কর্তব্য।

যারা প্রকৃতির কোলে কিছু সময় কাটাতে চান এবং ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ভরপুর ছবিও তুলতে চান—তাদের জন্য জিন্দা পার্ক নিঃসন্দেহে আদর্শ জায়গা।

মিমিয়া

×