
ব্যান্ড দলের সদস্যরা
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি এলাকায় ২০১৬ সালের আগষ্টে পাঁচ বাংলাদেশি অভিবাসী মিলে একটা নতুন বাংলা রক ব্যান্ডের সূচনা করে। ব্যান্ডের নামকরণ হয় ‘ক্রনেজ’।
বিদেশের মাটিতে নতুন জীবনে মানিয়ে নেয়া, জীবিকার পিছনে দৌঁড়াতে গিয়ে গান-বাজনা হয়ে যায়- বিনোদনের বিষয়। কিন্তু সেটা বদলে যায় যখন এই পাঁচজন একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয়। তারা নিজেদের ভেতর এক সঙ্গে নতুন কিছু একটা করার সম্ভাবনা দেখতে পায়।
ব্যান্ডের গায়ক রাফি জানায়, প্রবাসীরা একই সঙ্গে সময়ের দুই প্রান্তে বসবাস করে, যার কিনারার একপাশ থাকে বর্তমান, আর অন্যপাশ হারানো অতীতে। এই ‘সময়’ আর ‘কিনারা’র প্রতিশব্দ জুড়ে দিয়েই ব্যান্ডের নামকরণ হয় ‘ক্রনেজ’।
সম্পূর্ণ অপেশাদারি ভাবে, ঘরে বসে রেকর্ডিং, শুটিং করে মিউজিক ভিডিওসহ বের হলো তাদের প্রথম সিঙ্গেল, ‘স্বপ্নচারী’। এই গানের মধ্যে দিয়ে তারা সবাই প্রবাস জীবনের প্রথম দিককার চড়াই উৎরাই, আর তার মাঝে জীবন বদলানোর স্বপ্ন দেখার গল্প খুজে পেল, যাত্রা শুরু করলো ব্যান্ড - ক্রনেজ।
বিদেশের মাটিতে নতুন বাংলা গানের জন্ম দিয়ে সেই মাতৃভূমিকে নতুন করে জীবনের সঙ্গে তারা যোগ করে নেয়। গানের ভেতর দিয়ে তারা দুই দেশের মাঝের হাজার মাইলের ব্যবধানকে কমিয়ে নিয়ে আসে। তখন সময় আর কিনারা মিলিয়ে যায় এক বিন্দুতে। ক্রনেজ, এবং তার গান তাদের জন্য তাই অর্থবহ হয়ে উঠে।
তারা বোঝেন পরবাসে নিজ দেশের মৌলিক গানের পুরো একটি অ্যালবাম বের করা চারটিখানিক কথা নয়। ক্রনেজ শুধু মৌলিক গান করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা নিয়মিত এই গান গুলো বিভিন্ন দেশি অনুষ্ঠানে বাজানো শুরু করে।
পরবর্তী পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে বেসিস্ট অমিত জানায়, উত্তর আমেরিকার গন্ডি ওদের মূল লক্ষ্য নয়। ব্যান্ডের মূল উদ্দেশ্য এবং স্বপ্ন হচ্ছে- সমসাময়িক জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলোর পাশাপাশি নিজ দেশের শ্রোতারা এই প্রবাসী ব্যান্ডের গানগুলিকেও সাদরে গ্রহণ করে নিক।
ক্রনেজে বর্তমানে আছেন রাফি ভোকালে, টনি গিটারে, শরীফ গিটার ও সিন্থে, অমিত বেস এবং এনাম ড্রামসে।
২০১৬ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে পাচজনের এই দল একের পর এক ছয়টি মৌলিক গান তৈরি করেছে। সবশেষে ২০২৩ এর মার্চ এসে ৮টি গান নিয়ে সম্পূর্ণ একটা অ্যালবাম নিয়ে যখন তারা হাজির হলো, ব্যান্ড সংগীত ভক্তরা যেন হঠৎ নড়ে চড়ে বসলো।
অমিত বলেন, সবকিছু মিলিয়ে বিরূপ পরিবেশের মধ্য দিয়ে এরকম মানসম্মত একটা অ্যালবাম বের করার জন্য ক্রনেজ যথার্থই প্রশংসার দাবি রাখে। এটাকে বাংলা-রকের একটা নতুন মাইলফলক বলাই যায়। আমি আশা করব, বাংলাদেশের সব ব্যান্ড সংগীত শ্রোতারা এই অ্যালবামটিকে ভালবেসে গ্রহণ করবে।
অ্যালবাম : ‘ক্রনেজ’
এসআর