ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষবরণে ‘ধর নির্ভয় গান’ 

এনআই বুলবুল

প্রকাশিত: ২১:২৭, ১২ এপ্রিল ২০২৩; আপডেট: ১৫:৩৯, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

বর্ষবরণে ‘ধর নির্ভয় গান’ 

লাইসা আহমেদ  লিসা

আগামীকাল পহেলা বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। আরেকটি নতুন বছরের পরিক্রমা শুরু হলো বাঙালির নিজস্ব বর্ষপঞ্জিতে। বাংলাভাষীর জীবনে এলো এক অমলিন আনন্দের দিন। বরাবরের মতো এবারও বাংলা নববর্ষ বরণ করছে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। বাংলা নববর্ষ ও নানা বিষয়ে কথা বলেছেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ 
লিসা। সাক্ষাৎকার 
নিয়েছেন- 
এনআই বুলবুল

 

ছায়ানটের বর্ষবরণের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় কি?
ছায়ানটের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘ধর নির্ভয় গান’। এমন স্লোগান রাখার কারণ হলো করোনা পার করে আমরা একন স্বাচ্ছন্দ্য জীবনে এসেছি। কিন্তু এরপরেও আমরা নানা বিপর্যয়ের মধ্যে আছি। বিশ্বব্যাপী ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, দেশে ক্রমান্বয় অবক্ষয় মূল্যবোধের। এত কিছুর মধ্যেও আমরা আশাহত হই না। স্বপ্ন দেখি হাতে হাত রেখে সকলে একসঙ্গে মিশে যাবার। তাই এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে, সত্য-সুন্দরকে পাওয়ার অভিলাষী ছায়ানটের আহ্বান, দূর কর অতীতের সকল আবর্জনা, ‘ধর নির্ভয় গান’।
ছায়ানটের বর্ষবরণে কি কি আয়োজন থাকছে?


প্রতি বৈশাখে আমাদের যা যা থাকে এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। সকাল সোয়া ৬টায় শুরু হবে আয়োজন। ১০টা সমবেত গান, ১১টা একক গান ও ২টা আবৃত্তিসহ আমাদের সব আয়োজন থাকবে। গোটা অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন ¯িœগ্ধ আলোয় ¯œাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। বর্ষবরণ সার্থক করতে আন্তরিক নিষ্ঠায় মাস দুয়েক আগে থেকেই গান তোলা আর গলা মেলানোর কাজে নেমেছে শতাধিক খুদে ও বড় শিল্পী। রমনা উদ্যানের প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও। রমজানের মধ্যেই পহেলা বৈশাখ। 


নতুন বছর উদযাপন নিয়ে নানা রকম কথা শোনা যায়। আপনার মন্তব্য কি?
ধর্ম যার যার, উৎসব আমাদের সবার। এটিকে ভিন্নখাতে নেওয়ার কোনো কারণ নেই বলেই আমি মনে করি। এছাড়া রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা করে, সকলকে নিয়ে শুভ কর্মপথে চলার, কণ্ঠে নির্ভয়ের গান তুলে নেওয়ার ছায়ানটের এই আয়োজন। আমি বিশ্বাস করি, সর্বজনের সমর্থন, অংশগ্রহণ এবং উপলব্ধিতে আয়োজন সার্থক হবে।
নতুন বছরে আপনার প্রত্যাশা কি?


আমাদের এখানো সামাজিক অনেক বৈষম্য আছে। নানা রকম বিভাজন দেখি মানুষের মধ্যে। সব রকম বৈষম্য দূর হয়ে সবার মধ্যে যেন শুভবোধ জাগে এটাই আমার প্রত্যাশা।
আপনার ছোট বেলার বৈশাখের কথা জানতে চাই? 
রাজশাহীতে আমার ছোটবেলা কেটেছে। সেখানে আমাদের বাড়িতে ছোটবেলা থেকেই আমরা বৈশাখ উদযাপন করতে দেখে আসছি। ভোর রাত থেকে গান-বাজনা শুরু হতো। এ জন্য বলতে পারি, ছোটবেলায় আমার পহেলা বৈশাখ অন্যদের চেয়ে একটু বেশি আনন্দের হতো। এখনো সেই দিনগুলো খুব মনে পড়ে।


নতুন প্রজন্ম আমাদের সংস্কৃতিকে কেমন ধারণ করছে বলে মনে করেন?
নতুন প্রজন্ম আমাদের সংস্কৃতিকে সুন্দরভাবেই ধারণ করছে। একটি প্রজন্মের মধ্যে সবার চিন্তা ভাবনা এক থাকে না। তবে আমি মনে করি আমাদের নতুন প্রজন্ম এখন আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন। বিশেষ করে বাঙালি সংস্কৃতি উদযাপনে তারা কখনো পিছে সরে আসে না। 


আমাদের সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিতে কি ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন?
যত বেশি দেশের বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চলে আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে আয়োজন হবে ততই এর পরিধি বাড়বে। শুধু বছরের নির্দিষ্ট একটা দিনে নয়, অন্যদিনগুলোতে যদি চর্চা থাকে তাহলে নতুন প্রজন্ম বিপদগামী হবে না। একটা জাতির পরিচয় তার সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে। এটিকে সঠিকভাবে লালন করা ধারণ করা প্রয়োজন। এজন্য সব সময় সংস্কৃতির চর্চা করতে হয়।

×