যশোরে উপদেষ্টা পরিষদের নতুন সদস্য শেখ বশীরউদ্দিনের প্রত্যাহার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠী আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আকিজ উদ্দিনের সন্তান শেখ বশির উদ্দিনকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ যশোরের ছাত্র-জনতা। এরই প্রতিবাদে, গত রোববার (১০ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে যশোরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা শহরের দড়াটানা মোড় থেকে এক বিশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে, পরে তারা দড়াটানা ভৈরব চত্বরে এক পথসভা অনুষ্ঠিত করেন। এ সময় তারা শেখ বশির উদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
গত রোববার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ নেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, শিল্পপতি শেখ বশির উদ্দিন, এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। যশোরের শীর্ষ শিল্প গোষ্ঠী আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ বশির উদ্দিন, যিনি শেখ আকিজ উদ্দিনের সন্তান, তার ভাই শেখ আফিল উদ্দিন যশোর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চার মেয়াদে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শেখ বশির উদ্দিনের শপথ গ্রহণের পর থেকেই যশোরের ছাত্র সমাজের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রতিবাদী ছাত্ররা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের "দোসর" হিসেবে পরিচিত বশির উদ্দিনের শপথ জনগণের প্রতি অবিচার। তারা তার পদত্যাগ দাবিতে মিছিল করে এবং এ বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা স্লোগান দেন, "বশির উদ্দিনের পদত্যাগ চাই", "অবিচারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন চলবে" ইত্যাদি। তাদের দাবি, দেশীয় জনগণের স্বার্থের বিপরীতে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে এমন পদায়ন জনগণের প্রতি অন্যায়। প্রতিবাদী ছাত্রদের মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য উত্তেজনা তৈরি হলেও, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর, যশোর শহরজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়।
এসময় ছাত্র নেতারা বলেন, শেখ বশীরউদ্দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান বিরোধী তৎপরতায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের এই দোসরকে আইনের আওতায় আনার পরিবর্তে উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়ার ঘটনা আমাদেরকে হতবাক করেছে। এটা শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি ছাড়া আর কিছু নয়।
তারা আরও বলেন, রক্তের বিনিময়ে ছাত্রজনতার গণ অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্তি পায় জনগণ। আন্দোলনে ছাত্র হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে উপদেষ্টা হিসেবে মেনে নেবে না তারা। পথসভায় সমন্বয়ক রাশেদ খান, সুকর্ণ মারুফ, নূর ইসলাম, এস কে সুজন বক্তব্য দেন।
নুসরাত