ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জবির বিবিএ ডিনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ

 জবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৮:৫৭, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

জবির বিবিএ ডিনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ

জবি ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের বর্তমান ডিন অধ্যাপক ড. গোলাম মোস্তফার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের বর্তমান ডিন অধ্যাপক ড. গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রফেশনাল কোর্সে এই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সম্মানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিভাগটিতে তিনি যখন প্রফেশনাল কোর্সের পরিচালক ছিলেন, সেই সময়ে এই অতিরিক্ত সম্মানি তুলেছেন। পরবর্তীতে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে বিভাগের শিক্ষকদের।

পরবর্তীতে তাকে অতিরিক্ত সম্মানী ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অধ্যাপকের অনিয়মটি সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা চেয়েছেন বিভাগের শিক্ষকরা।

গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অধ্যাপক হিসেবে বেতন কাঠামো অনুযায়ী গ্রেড-২ এর বেতন ভাতা পান। তবে প্রফেশনাল কোর্সে গ্রেড-১ এর বেতন কাঠামো অনুযায়ী সম্মানী নিয়েছেন। 

অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা বিভাগের গ্রেড-২ বেতন কাঠামো অনুযায়ী একজন অধ্যাপকের কোর্স প্রতি সম্মানী হচ্ছে এক লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু তিনি গ্রেড-১ অনুযায়ী ১১২৫০০ এক লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা তুলেছে। যার ভ্যাটের টাকাও পরিশোধ করেছে বিভাগ। অনিয়মটি বিভাগের এমবিএ (ইভিনিং) স্প্রিং সেমিষ্টারে (১৯ তম ব্যাচ ২০২২) ঘটেছে। প্রফেশনাল কোর্স এর দ্বিতীয় ম্যাচেও এমনটি ঘটতে চলছিল।

প্রফেশনাল কোর্সের নীতিমালা অনুযায়ী, কোর্স শুরুর সময় একজন শিক্ষক যেই বেতন কাঠামো অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত থাকবেন। সেই অনুযায়ী তাকে সম্মানি নিতে হবে। কোর্স চলাকালীন সময় তিনি পদোন্নতি পেলেও প্রফেশনাল করছে সম্মানি বৃদ্ধি হবে না। তবে বিষয়টি সামনে আসার পর গোলাম মোস্তফা অতিরিক্ত সম্মানী ফেরত দিতে চেয়েছেন।

অভিযোগ বিষয়ে অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে আমার গ্রেট-১ অনুযায়ী বেতন সুবিধা পাওয়ার কথা। তবে, তা এখনো অনুমোদন হয়নি। অনুমোদন হলে প্রফেশনাল কোর্সেও গ্রেড-১ অনুযায়ী সম্মানি সুবিধা পাব। তবে, এখনো যেহেতু সিন্ডিকেট অনুমোদন দেয়নি, তাই আমার অতিরিক্ত সম্মানি নেওয়া ঠিক হয়নি। আমি তা সমন্বয় করে দিতে চেয়েছি। আবার পরবর্তীতে যখন গ্রেড-১ অনুমোদন হবে। আমি দাবী করে আমার সম্মানী নিয়ে নেব।

প্রফেশনাল কোর্সের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাদের সামনে এসেছে গত মাসে। কাজটিতে তিনি ঠিক করেনি। আমরা তাকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি নগদ অর্থ ফেরত দিতে চেয়েছেন। কিন্তু নগদ টাকা নেওয়ার না নিয়ম থাকায়, আগামী সেমিস্টারের সম্মানি থেকে সমন্বয় করে কেটে রাখব। এই বিষয়ে আমরা আর কোন ব্যবস্থা নিতে পারি না। তার 'গুড অয়েল' নষ্ট হয়েছে।

অভিযোগ বিষয়ে প্রফেশনাল কোর্সের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ও বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মহিউদ্দিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উনি সমন্বয় করে দিতে চেয়েছেন। কাজটি করা ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, আমার কাছে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ আসে নাই। যেহেতু এটা তাদের বিভাগের বিষয় তারা নিজেরাই বিষয়টি সমাধান করে নিবে। আমি  যতটুকু জানি সে নিজের গরজেই অভিযোগের টাকাটা ইতোমধ্যে সমন্বয় করে দিয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তদন্ত করা হবে কি না জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, যেহেতু বিষয়টি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রফেশনাল কোর্সের সেহেতু যারা দায়িত্বে আছে তারা বিষয়টি দেখবে।

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×