ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাবির ভর্তি পরীক্ষা শেষ

শিফটভিত্তিক বৈষম্যের অভিযোগ

জাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৮:৫৫, ৪ আগস্ট ২০২২

শিফটভিত্তিক বৈষম্যের অভিযোগ

ভর্তি পরীক্ষা 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। গত রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট ৫টি ইউনিটের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবারের ভর্তি পরীক্ষা। 

ইতোমধ্যে ‘এ’ ইউনিটভুক্ত  গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলোজি; ‘বি’ ইউনিটভুক্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ও আইন অনুষদের এবং ‘সি’ ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিকী অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। 

ফলাফল বিশ্লেষণে প্রতিবারের ন্যায় এবারেও প্রতিটি ইউনিটে শিফটভিত্তিক ফলাফলে ব্যাপক বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
সর্বশেষ গত বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট লঁহরা-ধফসরংংরড়হ.ড়ৎম -এ ‘এ’ ইউনিটভুক্ত গাণিতিক অনুষদের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। 

‘এ’ ইউনিটে ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য যথাক্রমে ২৩৪ টি ও ২৩২ টি করে মোট ৪৬৬ টি আসন রয়েছে। ছেলে ও মেয়েদের জন্য মোট আসনসংখ্যার প্রায় দশগুণ শিক্ষার্থীর ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদারের দেওয়া তথ্যমতে, ৪৬৬টি আসনের বিপরীতে ৭৬ হাজার ৩০৯ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করলেও অংশগ্রহণ করে ৬১ হাজার ৫৩৪ জন এবং উত্তীর্ণ হয়েছে ৩৩ হাজার ৯২০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থী ২২ হাজার ৯২৭ জন এবং মেয়ে শিক্ষার্থী ১০ হাজার ৯৯৩ জন। 

মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৭ দশমিক ৪০ পেয়ে ছেলেদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন মো. মাহিদুল ইসলাম আকিব এবং ৮৪ দশমিক ৪০ পেয়ে মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন সাদিয়া আক্তার।
এর আগে গত মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দিনে মোট সাত শিফটে অনুষ্ঠিত হয় এবারের ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা। 

প্রতি শিফটে প্রায় সমান সংখ্যক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। সে হিসেবে প্রতি শিফট থেকে প্রায় ১৪ দশমিক ২৯শতাংশ শিক্ষার্থী চান্স পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। শুধুমাত্র ২য় শিফট থেকেই চান্স পেয়েছে ১৪৫ জন যা মোট আসনের ৩১ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ৬ষ্ঠ শিফট থেকে চান্স পেয়েছে মাত্র ৭ জন যা মোট আসন সংখ্যার মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ। 

এছাড়াও ১ম শিফটে ৯২ জন (১৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ), ৩য় শিফটে ৩৮ জন (৮ দশমিক ১৫ শতাংশ), ৪র্থ শিফটে ৩০ জন (৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ), ৫ম শিফটে ১১৮ জন (২৫ দশমিক ৩২ শতাংশ) এবং ৭ম শিফট থেকে ৩৬ জন (৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ) ভর্তিচ্ছু চান্স পেয়েছে।

শিফট ভিত্তিক ফলাফলে ব্যাপক এ বৈষম্য সম্পর্কে আরিফুল ইসলাম নামের একজন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বলেন, জাবিতে চান্স পাওয়া কপালের ব্যাপার। মেধা থাকলেও সে চান্স পাবে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই কারণ এখানে ভিন্ন প্রশ্নে একই মূল্যায়ণ করা হয়। ভিন্ন প্রশ্নপত্রের মান ভিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক। 

কোন শিফটের প্রশ্ন তুলনামূলক সহজ হয় এবং কোন শিফটের প্রশ্নপত্র তুলনামূলক কঠিন। কিন্তু এভাবে একটি মেধাতালিকা প্রকাশ করা অযৌক্তিক। আমরা চাই এই বৈষম্যের নিরসন হোক এবং শিফট ভিত্তিক আলাদা আলাদা মেধাতালিকা প্রকাশ করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ১০ টি ইউনিটের পরিবর্তে ৫টি ইউনিটে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। শিফটভিত্তিক বৈষম্য কমাতে আগামীতে পরীক্ষা কমিটির সাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে ‘বি’ ও ‘সি’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বি ইউনিটে পাসের হার ছিল প্রায় ৩৪ শতাংশ এবং সি ইউনিটে পাসের হার ছিল প্রায় ৪৫ শতাংশ। বি ও সি ইউনিটেও একই বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়েছে।

 এছাড়াও গতকাল ‘ডি’ ইউনিটভুক্ত জীববিজ্ঞান অনুষদ এবং ‘ই’ ইউনিটভুক্ত ব্যবসায় অনুষদ ও আইবিএ-জেইউ ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। দুইটি ইউনিটেরই ফলাফল গতকাল রাতেই প্রকাশ করা কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ডিন অফিস।

 

এমএস

×