
ছবি: সংগৃহীত
টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক এবার সমর্থন জানালেন বিশ্বের সেরা বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেটের একটি চাঞ্চল্যকর প্রস্তাবকে। আমেরিকার বাজেট ডেফিসিট মেটানোর জন্য বাফেটের '৫ মিনিটের সমাধান' পরিকল্পনাকে টুইটারে শেয়ার করে মাস্ক যোগ করেছেন একটি সিম্পল কিন্তু শক্তিশালী ইমোজি। এই ছোট্ট ইমোজিটিই এখন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
ওয়ারেন বাফেটের এই প্রস্তাবটি আসলে ২০১১ সালের, কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি আবার ভাইরাল হয়েছে। তাঁর মতে, আমেরিকার কংগ্রেস যদি সত্যিই বাজেট ঘাটতি দূর করতে চায়, তাহলে একটি আইন পাস করলেই চলবে - "যখন বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৩% ছাড়িয়ে যাবে, তখন সব সদস্যের জন্য চলতি মেয়াদে পুনর্নির্বাচন নিষিদ্ধ হবে।" বাফেটের যুক্তি, এই সরল নিয়ম প্রয়োগ করলে কংগ্রেস সদস্যরা রাতারাতি ঘাটতি কমানোর উপায় বের করবেন, কারণ তাদের নিজেদের চেয়ার বাঁচানোর প্রশ্ন জড়িত!
ইলন মাস্কের এই সমর্থন আসার পর টুইটারে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, "বাফেটের পরিকল্পনাটি জিনিয়াস! রাজনীতিবিদরা যখন নিজেদের চাকরি ঝুঁকিতে দেখবেন, তখনই কেবল তারা সত্যিকারের সমাধান খুঁজবেন।" অন্যদিকে কিছু সমালোচক বলছেন, এই প্রস্তাব খুবই সরলীকৃত এবং এর বাস্তব প্রয়োগ জটিল হতে পারে।
মজার বিষয় হলো, এই বিতর্কে দুই শীর্ষ ধনকুবের একই পক্ষে। ওয়ারেন বাফেট দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকার ক্রমবর্ধমান জাতীয় ঋণ নিয়ে সতর্ক করে আসছেন। অন্যদিকে ইলন মাস্ক গত কয়েক বছর ধরে সরকারি ব্যয় ও ফেডারেল রিজার্ভের নীতির সমালোচনা করে টুইটারে সরব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্পোরেট নেতাদের এই ধরনের হস্তক্ষেপ ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক নীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো - এই '৫ মিনিটের সমাধান' কি সত্যিই কাজ করবে? অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করেন, বাফেটের প্রস্তাব রাজনৈতিক উদ্দীপনা তৈরি করতে পারে, কিন্তু অর্থনীতির জটিল সমস্যার স্থায়ী সমাধান এটি নয়। অন্যদিকে, অনেকেই এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, অন্তত এটি একটি কনক্রিট আইডিয়া যা বর্তমান ব্যবস্থায় জবাবদিহিতা বাড়াতে পারে।
এই ঘটনাটি প্রমাণ করছে যে আমেরিকার অর্থনৈতিক সংকট এখন শুধু অর্থনীতিবিদ বা রাজনীতিবিদদের আলোচনার বিষয় নয় - কর্পোরেট নেতারাও এতে সক্রিয়ভাবে কণ্ঠ দিচ্ছেন। ইলন মাস্কের একটি ইমোজি শেয়ার করাই যখন জাতীয় বিতর্কের জন্ম দিতে পারে, তখন বোঝাই যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যম কীভাবে আধুনিক অর্থনৈতিক আলোচনার রূপ বদলে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত, বাফেট-মাস্কের এই জুটির পরামর্শ কি আমেরিকার নীতিনির্ধারকরা আমলে নেবেন? সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা!
সাব্বির