ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আসছে চীনের ৩০০ প্রতিনিধি, পাল্টে যাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি!

প্রকাশিত: ১৮:৪২, ২৭ মে ২০২৫

আসছে চীনের ৩০০ প্রতিনিধি, পাল্টে যাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি!

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের সাম্প্রতিক চীন সফরের ইতিবাচক প্রভাব এবার বাস্তব রূপ নিতে যাচ্ছে। চীন থেকে প্রায় ৩০০ ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীর একটি বিশাল প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে। স্বাধীনতার পর এটাই হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বিদেশি ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের সফর।

চীনা প্রতিনিধি দলের আগমনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চলছে প্রস্তুতির ব্যস্ততা। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য টানাপড়েনের ফলে চীনের ব্যবসায়ীরা নতুন গন্তব্য খুঁজছে—আর তাতেই বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য।

আগামী ৩১ মে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন তাও-এর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছাবে। সফরকালে পহেলা জুন থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্য সম্মেলন। এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস

চীনের প্রতিনিধি দল মূলত গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যালস, তথ্যপ্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স খাতের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী নিয়ে গঠিত। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) জানিয়েছে, এই সফর ঘিরে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

সফরের প্রথম দিন, ৩১ মে দুপুর ১২টায় ঢাকায় পৌঁছে বিকেলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী। পরদিন, পহেলা জুন অনুষ্ঠিত হবে পাঁচটি সেশন যেখানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ম্যাচ-মেকিং করবেন চীনা বিনিয়োগকারীরা। এরপরদিনও চীনা ও বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা পৃথক পাঁচটি সেশনে অংশ নেবেন।

এই সেশনগুলো মূলত নিম্নোক্ত খাতগুলো ঘিরে আয়োজন করা হচ্ছে:

  • গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল

  • কৃষি

  • তথ্যপ্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স

  • স্বাস্থ্যসেবা

  • অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাত

বিডা ও বাংলাদেশ ইকোনোমিক জোন অথরিটি (বেজা) ইতোমধ্যে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি বিশেষ চায়নিজ ইকোনোমিক জোন চূড়ান্ত করেছে। এছাড়াও চাঁদপুরভোলা জেলায় আরও দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল অনুমোদন পেয়েছে।

এই সফরে চীনের ১৪টি কোম্পানির ৩০ জন প্রতিনিধি বাংলাদেশি পোশাক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশেষ ম্যাচ-মেকিং সভায় অংশ নেবেন।

তবে, বাংলাদেশের রপ্তানি এখনো চীনে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়নি। অপরদিকে, বাংলাদেশের মোট আমদানির এক-তৃতীয়াংশই আসে চীন থেকে, যার বেশিরভাগই শিল্প খাতের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি।

সম্প্রতি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়লেও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় হচ্ছে। চীনা বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের নেপথ্যে রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার সফর, উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ও বিনিয়োগ সম্মেলনগুলোতে চীনের সক্রিয় অংশগ্রহণ। বিশেষ করে ইউনান প্রদেশের গভর্নর ওয়াং ইউবো-র বাংলাদেশ সফর এই আগ্রহ বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।

শুধু বাণিজ্যই নয়, স্বাস্থ্যসেবা খাতেও বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে কাজ করছে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হয়ে উঠতে পারে।

সূত্রঃ https://youtu.be/izMRVR312DI?si=wRl2PaJKiYeNGURw

ইমরান

×