
ছবিঃ সংগৃহীত
আমরা প্রায়ই শুনি, “বাবল ভেঙে গেছে”—মানে, স্টক মার্কেটে অনেক কোম্পানির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়ে হঠাৎ করে পড়ে গেছে। এতে অনেকেই টাকা হারান, হতাশ হন। কিন্তু আপনি জানেন কি, এই ‘বাবল’গুলোই কখনো কখনো প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মূল চালিকা শক্তি হয়ে দাঁড়ায়?
একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, স্টক মার্কেটের এই বাবলগুলো আসলে নতুন কোম্পানিকে স্বপ্ন দেখায়, বিনিয়োগকারীদের টাকা এনে দেয়, এবং তাদের ঝুঁকি নিতে উৎসাহিত করে। অনেক সময় এসব ঝুঁকি থেকেই জন্ম নেয় যুগান্তকারী নতুন প্রযুক্তি—যেমন ইন্টারনেট, স্মার্টফোন বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
এই গবেষণাটি করেছেন টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সাস টেক এবং বেলজিয়ামের কিছু গবেষক মিলে। তারা দেখিয়েছেন, বাবল না হলে অনেক নতুন প্রযুক্তি হয়তো আলোর মুখ দেখতই না। কারণ তখন বিনিয়োগ আসত না, বা নতুন আইডিয়াগুলোকে সময় দেওয়ার সুযোগ মিলত না।
গ্রিনস্প্যানের কথাও মিলছে
এই বিষয়ে অনেক আগেই সাবেক ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান অ্যালান গ্রিনস্প্যান বলেছিলেন, “সোভিয়েত ইউনিয়নে কোনো বাবল ছিল না, তাই উদ্ভাবনও ছিল না।” তার বক্তব্য ছিল, উদ্ভাবন চাইলে ঝুঁকি নিতে হবে—আর ঝুঁকি নিতে হলে বিনিয়োগ দরকার। বাবল সেই বিনিয়োগ এনে দেয়।
বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা
তবে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কতা জরুরি। বাবল ফেটে গেলে অনেকেই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন। তাই কার কোথায় বিনিয়োগ করা উচিত, সেটা বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু রাষ্ট্র বা সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি ভিন্ন—তারা দেখেন, এসব ঝুঁকি সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে।
সব বাবল এক নয়
সব বাবলই কিন্তু ভালো নয়। গবেষণায় বলা হয়েছে, স্টক মার্কেটের বাবলগুলো অনেক সময় প্রযুক্তি বা শিল্প খাতকে এগিয়ে নেয়, যাকে বলা হয় "বৃদ্ধি-বান্ধব বাবল"। কিন্তু অন্যদিকে যেমন রিয়েল এস্টেট বা ক্রিপ্টোকারেন্সির বাবল—এগুলো হয়তো অর্থনীতিতে বাস্তব কোন অবদান রাখে না, বরং ক্ষতি ডেকে আনে।
যারা আজকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা অন্যান্য প্রযুক্তি নিয়ে বিনিয়োগ করছেন, তারা হয়তো বড় ঝুঁকি নিচ্ছেন। অনেকে লাভ করবেন, অনেকে হারাবেন। কিন্তু বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এইসব বাবলই হয়তো আগামী দিনের নতুন আবিষ্কারের পথ তৈরি করছে।
মারিয়া