
ছবি: জনকণ্ঠ
দেশের ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি তথা এসএমই শিল্পের সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।
সংগঠনটি মনে করে, দেশের এসএমই খাতের বিকাশ হলে নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। বিশেষ করে এসএমই খাতের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে কুটির এবং এসএমই খাতকে আলাদা করে সুযোগ তৈরি করা হলে এ খাতে বিনিয়োগ আরও বাড়বে। এছাড়া উদ্যোক্তাদের এসএমই খাতে বিনিয়োগের ওপর নানা রকম সুযোগ করে দিতে হবে। এজন্য স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া, নতুন শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগ করা হলে ট্যাক্স হলিডে সুবিধা নিশ্চিত করা ও বিডায় ওয়ানস্টপ সার্ভিসের কথা বলেন উদ্যোক্তারা।
শনিবার ঢাকায় বিসিআই বোর্ডরুমে ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাষ্ট্রি বিশেষ করে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সমস্যা সমূহ নিয়ে একটি গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকেই বক্তারা এসএমই খাত উন্নয়নের ওপর সর্বোচ্চ জোর দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিআই এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)। তিনি এসএমই খাত উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারিখাতের সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী। বিসিআই এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. মো. হেলাল উদ্দিন, এনডিসি অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। বিসিআই ধারাবাহিকভাবে ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাষ্ট্রি বিশেষ করে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সমস্যা সমূহ নিয়ে মত বিনিময়ের জন্য খাত ভিত্তিক বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারকে আমন্ত্রন জানিয়ে তাদের কাছ থেকে নিজ নিজ সেক্টরের সমস্যা সমূহ চিহ্নিত করে সমাধানের পথ বের করার জন্য কাজ করছে।
আর এরই ধারাবাহিকতায় ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের প্রতিনিধিবৃন্দকে এবারের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বৈঠকে প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, দেশের শিল্পখাতে ৯০ শতাংশ এসমএই খাতে অন্তর্ভুক্ত। এসমএই খাত দেশের অর্থনীতির প্রাণ। এখানে কুটির, ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র এবং মাঝারি মানের শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু সবার সমস্যা ও সুযোগ-সুবিধা একরকম নয়। এজন্য এসএমই খাতের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে হবে। যাতে আমরা সবার সমস্যা সমাধানে কাজ করতে পারি। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে এসএমই ফাউন্ডেশন একমত পোষণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা ভালো যে তারা আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করে নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করবেন। এসএমই খাত উন্নয়নে সামগ্রিকভাবে সবাইকে নিয়েই কাজ করতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
এ সময় শহীদুল ইসলাম নিরু, পরিচালক, বিসিআই, জাহাঙ্গির আলম, পরিচালক, বিসিআই, শাহেদুল ইসলাম (হেলাল), সাবেক সভাপতি, বিসিআই, ওবায়দুর রহমান, সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যালুমিনিয়াম ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, আলি জামান, সভাপতি, এসএমই ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বংলাদেশ, মো. আব্দুর রাজ্জাক, সভাপতি, বিইআইওএ, ইঞ্জি: উৎপল কুমার দাস, সভাপতি, বংলাদেশ ডাই অ্যান্ড মোল্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, ইসমাত জেরিন খান, সদস্য, বিসিআই, ড. সৈয়দ ইহছানুল করিম, সাবেক পরিচালক (টিটিআই) বিটাক, শাহরিয়ার আহমেদ, পরিচালক, বিইআইওএ, সঞ্জয় পাল, সিনিয়র ম্যানেজার (এসএমই ব্যাংকিং) সিমান্ত ব্যাংক পিএলসি, একেএম জাহিদুল হক, এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার, পিকেএসএফ, হাবিবুর রহমান, জয়েন্ট ডিরেক্টর, বাংলাদেশ ব্যাংক, মো: খালেদ আবু নাসের, সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ কম্পিটিশন কমিশন, মঈনুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক, এসএমই ফাউন্ডেশন, মো: মাহমুদুল আলম, সদস্য, বাংলাদেশ ডাই অ্যান্ড মোন্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, দিলিপ মজুমদার, সদস্য, বাংলাদেশ ডাই অ্যান্ড মোল্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, ড. ইঞ্জিনিয়ার মাজহারুল হাবিব, অতিরিক্ত পরিচালক ও কেন্দ্র প্রধান, বিটাক, মো: শেখ সাদি, সদস্য, এগরিকালচার মেশিনারিজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, মাকসুমুল আজিম, ডেপুটি হেড অফ অপারেশনস অ্যান্ড লজিস্টিকস উত্তরা মটোরস লি: প্রমুখ উপস্থিত থেকে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সমস্যা সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে সকলের বক্তব্য শুনে বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, বিসিআই দেশে নতুন উদ্যোক্তা, মাইক্রো ও স্মণী শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। বিশেষ করে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি ভিত্তিক শিল্প, হালাল পণ্য, ব্লু ইকোনোমি, চামড়াজাত পণ্য ইত্যাদি খাতের উন্নয়নে কাজ করছে। এছাড়াও, স্থানীয় সকল শিল্পের সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা নিরসনে বিসিআই কাজ করে চলেছে। এই সভায় বিভিন্ন সমস্যা এবং এর সম্ভাব্য সমাধান সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। এখানে ঋণ ব্যবস্থা, পরিবেশ সার্টিফিকেশন, নারী উদ্দ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তির প্রতিবন্ধকতা, মূসক ও কর ব্যবস্থাপনা, সার্টিফিকেশন, বাজার ব্যবস্থাপনা, প্রতিযোগিতা আইনের বাস্তবায়ন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে।
শিহাব