
আপনি নিশ্চয়ই জানেন, একটি চমৎকার ধারণার উদ্ভব কতটা রোমাঞ্চকর।
আর সেই ধারণাটিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ঝক্কিটাও নিশ্চয় অনুভব করেছেন—যন্ত্রপাতি খোঁজা, টেকনোলজি শেখা (অথবা কাউকে খুঁজে বের করা যে জানে), রাত জেগে কাজ করা, কারণ আপনার মতো করে কেউই বুঝতে পারে না আপনি কী চাইছেন।
সেই কঠিন পথচলাই বেশিরভাগ ধারণাকে মেরে ফেলে।
উদ্যোক্তা হওয়ার পথে বাধা কমছে
এই সপ্তাহে আমি বার্লিনে গুগল আয়োজিত ডেভেলপার ইভেন্ট Google I/O Connect-এ উপস্থিত ছিলাম। কোডার হিসেবে নয়, বরং একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে—বিশ্বকে যেভাবে দ্রুত বদলে দিচ্ছে এআই, তা দেখতে।
আমি গুগল এআই স্টুডিও নির্মাতাদের সঙ্গে একটি রুদ্ধদ্বার আলোচনায় অংশ নিই। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আপনি “ভাইব কোড” করতে পারেন—মানে আপনি শুধু সাধারণ ইংরেজিতে বলে দিতে পারেন, কী ধরনের অ্যাপ আপনি চান, আর বাকিটা এআই সামলে নেবে। যদিও এখনো বড় স্কেল বা জটিল অ্যাপ তৈরি করা এতে কঠিন, তবুও আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম:
"আমরা কি এমন ভবিষ্যতের খুব কাছাকাছি, যেখানে কেউ এক লাইন কোড না লিখেই সম্পূর্ণ অ্যাপ তৈরি করতে পারবে?"
তাদের জবাব ছিল আত্মবিশ্বাসে ভরপুর: “আমরা খুব কাছেই।”
যদি সত্যি এমন হয়, তাহলে শুধু প্রোগ্রামারদের জন্য নয়, সবার জন্যই বদলে যাবে খেলা—এমনকি আমাদের সন্তানের জন্যও।
কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ?
উদ্যোক্তা হওয়ার সবচেয়ে বড় বাধা ছিল বাস্তবায়ন—ধারণা নয়, সেটা তৈরি করা। এখন যদি সেই দেয়াল ভেঙে পড়ে, তাহলে প্রবেশের সুযোগও বড় হয়ে যায়।
আপনার সন্তানের খেয়ালী ধারণাটা—যেটা সে খাতার পাতায় লিখে রেখেছে, বা ডিনারে হঠাৎ বলে ফেলেছে—তা হয়তো আর বছরের পর বছর কোডিং, ফান্ডিং বা পিচের অপেক্ষায় থাকবে না। হয়তো শুধু একটা ভালভাবে লেখা প্রম্পট আর একটু কৌতূহলই যথেষ্ট হবে।
আগামী প্রজন্মের জন্য প্রয়োজনীয় ৩টি দক্ষতা
১. পরিষ্কারভাবে ভাবনা প্রকাশ (মানুষ ও এআই উভয়ের সঙ্গে)
এআই যদি পণ্য তৈরি করতে পারে, তাহলে যিনি সবচেয়ে ভালভাবে তা ব্যাখ্যা করতে পারেন, তিনিই জয়ী।
“প্রম্পটিং” এখন নতুন “প্রোটোটাইপিং”।
২. সৃজনশীল সমস্যা সমাধান
টেকনিক্যাল বাধা নেই, তবে এখন প্রশ্ন—কী বানাবেন?
সেরা উদ্যোক্তারা প্রশ্ন করতে জানেন: “এটা আগে কেউ ঠিক করল না কেন?”
৩. ব্যবসার মূল ধারণাগুলো এখনো গুরুত্বপূর্ণ
এআই অ্যাপ বানাবে, কিন্তু ব্যবসা নয়।
কাস্টমার, ক্যাশ ফ্লো, প্রতিযোগিতা—এসব বুঝতে হবে। বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।
এটাই ভবিষ্যতের প্রস্তুতি
এই প্রজন্ম শুধু উন্নত টুলস নয়, একেবারে নতুন মানসিকতা নিয়ে বড় হচ্ছে।
“কেউ একজন বানাবে”–এর বদলে “আমি বানালে কেমন হয়?”
এটা আপনার সন্তানকে এখনই স্টার্টআপ শুরু করতে বলার কথা নয়।
বরং, তাদের চিন্তার ধরণ গড়ে তোলার সময়। উদ্যোগ নেওয়া, সমস্যা দেখা, এবং নিজের ভাবনা সঠিকভাবে প্রকাশ করতে শেখানো—এই দক্ষতাই আগামী দিনের সফলতার চাবিকাঠি।
Jahan