ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

জবির লিফট যেন মরণ ফাঁদ!

মামুন শেখ, জবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২১:১৩, ২ জুন ২০২৩

জবির লিফট যেন  মরণ ফাঁদ!

.

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন একাডেমিক ভবনের লিফটগুলো যেন শিক্ষার্থীদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। দুদিন পর পর হচ্ছে দুর্ঘটনা, লিফট ব্যবহারে বাড়ছে আতঙ্ক। প্রতিকারে নেই প্রশাসনের কোনো ব্যবস্থা। তবে কি বড় কোনো দুর্ঘটনা হলেই ঘুম ভাঙবে প্রশাসনের? প্রশ্ন সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

১৩ তালা বিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের আট হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র তিনটি লিফট রয়েছে। আর নতুন একটি লিফট পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলেও চলাচল উপযোগী হয়নি এখনো। ফলে প্রতিদিনই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ক্লাসে পৌঁছাতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে করে সঠিক সময়ে ক্লাসে পৌঁছাতে পারে না শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে লিফটে লেগে থাকে উপচেপড়া ভিড়।

এতে করে দুদিন পর পর ঘটছে লিফট দুর্ঘটনা। হঠাৎ লিফট থেমে যাওয়া, উপর থেকে নিচে ছিঁড়ে পড়ে যাওয়া, চলতি পথে লিফট বন্ধ হয়ে যাওয়া, এগুলো যেন নিত্যদিনের ঘটনা। ফলে লিফট ব্যবহারে বাড়ছে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক। লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করতে গিয়ে অসুস্থ হচ্ছেন কেউ কেউ। অপ্রতুল লিফট আর অধিক ব্যবহার লিফট দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। নি¤œমানের লিফট লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে জানান তারা।

জানা যায়, গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর লিফটে আটকেপড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, লিফটের ভেতরে আটকে থাকার পর লিফট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কয়েক ব্যক্তি দ্রুত দরজার একাংশ খুলতে সক্ষম হন। এরপর আস্তে আস্তে লিফটে আটকে থাকা শিক্ষার্থীদের চেয়ারের সাহায্যে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন তারা। নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এই হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জন্য জবির নতুন একাডেমিক ভবনে রয়েছে মাত্র চারটি লিফট, যার একটি আবার রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য। সেই হিসেবে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র তিনটি লিফট যেগুলোর প্রায় সময়ই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অকেজো হয়ে থাকে একটি দুটি। যার ফলে প্রায় সময় ঝুঁকি নিয়েই লিফটে চলাচল করতে হয় জবি শিক্ষার্থীদের।

বিষয়ে গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তানজিল আহমেদ বলেন, প্রতিদিন হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী এই লিফট ব্যবহার করেন। অথচ বেশির ভাগ সময়ই নষ্ট থাকে। আবার সচল থাকলেও নানারকম ভোগান্তি। এখন কি একজন দুজন আটকা পড়ে না মরলে প্রশাসনের হুঁশ হবে না?

আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের উবায় হাসান বলেন, একবার আমিও এভাবে আটকে পড়ছিলাম। তখন ফ্যানও ছিল না। অনেকক্ষণ আটকে থাকার পরে ঠিক এভাবে বের হয়েছিলাম। হাস্যকর বিষয় হচ্ছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র তিনটি লিফট যার দুটিই আবার অচল। আল্লাহ না করুক বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার আগে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

×