
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে মানুষ আবিষ্কার করেছে দ্রুততম যান। সময়ের মূল্য অনেক বেশি, তার চেয়ে বেশি জীবনের মূল্য। একসময় আমাদের যানবাহন হিসেবে সাইকেল, রিকশা, অটোরিকশা, বেবিট্যাক্সিসহ বাস ও ট্রেন ছিল চলাচলের প্রধান বাহন। সময় বদলেছে সময়ের মূল্যায়নে আবিষ্কৃত হয়েছে দ্রুতগতির যান। তার মধ্যে মোটরসাইকেল অন্যতম। আমাদের নিত্যদিনের কর্ম পরিচালনা সম্পন্ন করতে আমাদের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করতে হয়। চলাচলকে সহজ করতে ব্যবহার হয় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। অন্যান্য যানবাহনে সময় বেশি লাগার কারণে বেশিরভাগ মানুষের প্রথম পছন্দ মোটরসাইকেল। বিশেষ করে বাংলাদেশের বেশিরভাগ কিশোর ও যুবকরা মোটরসাইকেলের প্রতি বেশি আসক্ত। দ্রুততম এই বাহনে যাতায়াত করা যেমন আরামদায়ক তেমনই সময় কম লাগে। ঝুঁকিও সবচেয়ে বেশি। কিছুদিন আগে এক রিপোর্টে দেখানো হয় এদেশের দুর্ঘটনার প্রায় ৩৫% দুর্ঘটনা ঘটে মোটরসাইকেলে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালনা, প্রতিযোগতামূলক ড্রাইভিং, বার বার লেন পরিবর্তন, গাড়ি চালানো অবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহার, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ ইত্যাদি। মোটারসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে আবশ্যকীয় কাজগুলো মান্য না করার কারণে আমাদের দেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। এসব দুর্ঘটনা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হলে ট্রাফিক আইন মান্য করা, গাড়ি ড্রাইভিং করার সময় হেলমেট পরিধান করা, মোবাইল ব্যবহার না করা, গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসা, সামনে পেছনে নজর রাখা এবং সাবধানতার সঙ্গে মোটরসাইকেল ড্রাইভ করা আবশ্যক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিশোর, যুবক ছেলেদের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনাগুলো খুব বেশি ঘটে থাকে। একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না- এ বাক্যটি জানা থাকলেও কার্যত কেউ মানার চেষ্টা করে না। প্রথমে এটাকে নীতিবাক্য বলেই অবজ্ঞা করে কিন্তু পরবর্তীকালে দুর্ঘটনার শিকার হলে সে বাণী অন্যকে শোনায়। সকলের উচিত নিজেকে নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখার জন্য নিরাপদ ড্রাইভিং করা। পিতামাতার উচিত নিজের সন্তানদের বিষয়গুলো সুন্দরভাবে বোঝানো। ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি। সড়কের দুর্ঘটনা আকস্মিক হয়ে যায়। হয়তো হঠাৎ মৃত্যু, না হয় সারাজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করে নিতে হয়। সবকিছু শেষ হওয়ার পূর্বে অবশ্যই নিজেকে সতর্ক হতে হবে। সময়ের মূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে জীবনেরও মূল্যায়ন করতে হবে। যাত্রা শুরুর পূর্বে ভালভাবে মোটরসাইকেল চেক করে বের হওয়াটাও জরুরী। যাত্রা হোক সুখের ও বিপদমুক্ত।
কটিয়াদি, কিশোরগঞ্জ থেকে