ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

এক যুগ পরেও জমির দখল পায়নি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

প্রকাশিত: ২১:০৭, ২৬ জুন ২০২২

এক যুগ পরেও জমির দখল পায়নি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাধবপুর ॥ আমার বাবা জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। আমাদের এক খন্ড জমি নেই। রেল লাইনের পাশে পরের জায়গায় ঘর বেধে কোন রকম বেঁচে আছি। ১২ বছর আগে সরকার ৩০শতক জমি আমার বাবার নামে দলিল করে দিয়েছিল। কিন্তু ১২ বছর পর পেড়িয়ে গেলেও আজও জমির দখল পায়নি। বাবা মারা গেছেন ৪ বছর হল তিনিও জমির দখল দেখে যেতে পারেনি। জমি দখলের কথা বলতে গেলেই আমাদেরকে হুমকি দেওয়া হয়। এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহারাজের ছেলে জিয়া উদ্দিন। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধা সাহারাজের নামে একটি ঘর বরাদ্ধ দিয়েছে। কিন্তু জায়গা শনাক্তের কারনে ঘরটিও ফেরত যেতে পারে এমন আশংকায় দিন কাটছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের। মুক্তিযোদ্ধা সাহারাজের ছেলে জিয়া উদ্দিন বলেন, ২০১১সালে সরকারের পক্ষে তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভুমি) শারমিন জাহান রসুলপুর মৌজায় ৩৭১বাই ৫০৫ দাগে ১নং খতিয়ানে সাহারাজের নামে ৯৯ বছরের জন্য ৩০শতক ভুমি বন্দোবস্ত দলিল (৫১৭০/২০১১) করে দেয়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারনে বন্দোবস্ত জমির দখল পাওয়া সম্ভব হয়নি। বন্দোবস্ত কৃত জায়গায় দখল দিতে গেলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে জমির জবর দখলকারীরা। মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সুফিয়া বেগম জানান, জমির দখল পেতে মুক্তিযোদ্ধা সাহারাজ মিয়া প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু জমির দখল পায়নি। এই কষ্ট নিয়ে গত ৪ বছর আগে তিনি মারা গেছেন। এখন আমরা ইটাখোলা রেল লাইনের পাশে সরকারি জায়গায় ঘর বেধে কোন রকম বেঁচে আছি। আমাদের বন্দোবস্তকৃত জায়গায় সরকার একটি ঘর বরাদ্ধ দিয়েছে। কিন্তু জমির দখল না পেলে ঘর করা সম্ভব হবেনা। মাধবপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতা মোঃ এনামূল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সাহারাজ একটি অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। এই বিবেচনায় তার বন্দোবস্ত জমির নামে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে একটি ঘর বরাদ্ধ পেয়েছে। সরকার যদি মুক্তিযোদ্ধার জমিটি দখল মুক্ত করে দেয় তাহলে সহজেই তার জায়গায় সরকারি ঘর নির্মাণ করা সম্ভব। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন বলেন, যত বড় প্রভাবশালীই হোক মুক্তিযোদ্ধার জায়গা দখল মুক্ত করে উক্ত জায়গায় ঘর নির্মাণ করা হবে। এ কাজে কেউ বাধা প্রদান করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে।
×