অনলাইন রিপোর্টার ॥ সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর দশ টাকা মূল্যমানের স্মারক ডাকটিকিট, দশ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম, ৫ টাকা মূল্যমানের ডাটাকার্ড ও একটি বিশেষ সীলমোহর প্রকাশ করেছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার (২১ নবেম্বর) সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং ডাটাকার্ড প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী এ সময় বিশেষ সীলমোহর ব্যবহার করেন। এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে মন্ত্রী বিবৃতি দিয়েছেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ২১ নবেম্বরকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে একটি মহান দিন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের সূচনা করে ১৯৭১ সালের ২১ নবেম্বর থেকে। এই মহান দিনটির সুবর্ণজয়ন্তী ৫০ বছর আগে যুদ্ধের ময়দানে বীরত্ব ও ত্যাগের মহিমা স্মারক ডাকটিকিটের মাধ্যমে স্মরণীয় করে রাখতে পারা আমাদের জন্য খুবই গৌরবের।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাঙালি জাতিকে স্বাধিকার আদায়ে উদ্বুদ্ধ ও প্রস্তুত করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ রাতে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি সেনা, ছাত্র, ও সাধারণ জনতা মিলে গড়ে তোলে সামরিক বাহিনী। শুরু হয় দুর্বার মুক্তিযুদ্ধ।
মন্ত্রী বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের মাঠেই বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম হয়। জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনী মনে-প্রাণে একাত্ম হয়ে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
তার মধ্য দিয়ে জনগণের সঙ্গে সেনাবাহিনীর আত্মার ও রক্তের সম্পর্ক তৈরি হয়।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী জাতির সাহস, আস্থা, আত্মবিশ্বাস এবং গর্বের প্রতীক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ অতি গুরুত্ববহ ও অপরিহার্য ভূমিকা পালন করছেন।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়েও তিনি তার আজীবনের স্বপ্ন একটি আধুনিক ও গর্ব করার মতো সশস্ত্র বাহিনী গঠনের কাজ শুরু করেন।
সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠন করে ব্রিগেড পর্যায়ে উন্নীত করেন। সীমাহীন বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সত্ত্বেও তিন বাহিনীর জন্য আধুনিক অস্ত্র সরঞ্জামাদি আনেন এবং সেনাবাহিনীর মর্যাদার প্রতীক বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন।
পঁচাত্তরের পর দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দীর্ঘ ২১ বছরের অপশাসনে সৃষ্ট পশ্চাদপদতা থেকে আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সংগ্রাম চলছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে। গত ১৩ বছরে সশস্ত্র বাহিনী একটি আধুনিকতার মহাসড়কে ওঠে এসেছে।
মন্ত্রী বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করে যাঁরা নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সেই সব বীর শহীদদের প্রতি গভীর সম্মান এবং প্রগাঢ় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান, সশস্ত্র বিভাগের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল আহমেদ, বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিরাজ উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের বিভিন্ন সংস্থা প্রধানরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ডাকটিকিট প্রকাশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার ভূমিকার প্রশংসা করেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় মন্ত্রীকে সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
শীর্ষ সংবাদ: