ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ বন্যায় তিস্তাপাড়ের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ২১ অক্টোবর ২০২১

হঠাৎ বন্যায় তিস্তাপাড়ের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ ভারত গজলডোবা ব্যারাজের সব গেট খুলে দেয়ায় উজান নেমে থেকে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এতে রংপুরে তীরবর্তী চরের প্লাবিত নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে ফসলী জমি এবং বসতভিটা পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার অন্তত ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। নদীতীরবর্তী এলাকায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে বইছে। আকস্মিক এ বন্যায় তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, আবাদি জমিসহ ধান, আলু, শাকসবজি ও অন্যান্য ফসলের ক্ষেত। পানির তীব্র স্রোতে নদীভাঙনের ফলে সড়কপথেও ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে রংপুর-লালমনিরহাট জেলার আঞ্চলিক সড়কের একটি অংশ ধসে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে রংপুরের গঙ্গাচড়ার মহিপুর শেখ হাসিনা সেতু থেকে লালমিনরহাটের কালীগঞ্জ কাকিনা পর্যন্ত সড়কপথে যোগাযোগ। এ ছাড়া বিভিন্ন চর এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গঙ্গাচড়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেকেই উঁচু স্থানে ও বাঁধের ওপরে আশ্রয় নিয়েছেন। কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের চর ঢুষমারা, গদাই, পাঞ্জরভাঙ্গাসহ তিস্তা নদীতীরবর্তী বেশ কিছু গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে সেখানকার অন্ততঃ দুই হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। একই চিত্র পীরগাছা উপজেলায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, দেশের উজানে ভারতের সিকিম, দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখান থেকে ভাটির দিকে ধেয়ে আসা পানিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে তিস্তা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা প্রিন্স বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদী বেড়েছে। বন্যার পানি সামাল দিতে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট (জলকপাট) খুলে রাখা হয়েছে। আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর রাখছি। তিস্তা অববাহিকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে মানুষজনকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, ‘বুধবার বন্যাকবলিতদের ২০ টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার দেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী ত্রাণ বিতরণ করা হবে।’
×