ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিতীয় দিনেও নেভেনি সুন্দরবনের আগুন, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: ১৬:২৫, ৪ মে ২০২১

দ্বিতীয় দিনেও নেভেনি সুন্দরবনের আগুন, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় লাগা আগুন গত ২৪ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। মঙ্গলবার সকল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের পাশাপাশি বনরক্ষী-বনকর্মকর্তা ও সংলগ্ন গ্রামবাসী আগুন নেভানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। এর আগে সোমবার সকাল ১০ টার দিকে সেখানে আগুন দেখতে পেয়ে গ্রামবাসী বন বিভাগকে খবর দেন। অগ্নিকাণ্ড এলাকায় দেড় কিলোমিটার ঘিরে ফায়ার লাইন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চলছে। এখনও সেখানে আগুন জ্বলছে। আজ মঙ্গলবার সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, দ্বিতীয় দিনে আগুন নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক করছি। আশা করছি আজকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসবে।’ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, বাগেরহাটের উপসহকারী পরিচালক গোলাম সরোয়ার বলেন, মঙ্গলবার সকালে তিনটি ইউনিট আগুন নিভানোর কাজ করছে। পানি দেওয়ার জন্য ৪ কিলোমিটার পাইপ বসানো হয়েছে। আশা করছি আজ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ( সিএফ) মোঃ মইনুদ্দিন খান এবং পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান। সিএফ মইনুদ্দিন খান বলেন, অগ্নিকাণ্ড এলাকা খুবই দুর্গম। কাছাকাছি পানি নেই। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট পাইপ বসিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করছে। সাথে বনকমী ও স্থানীয়রা রয়েছেন। ঘটনা তদন্তে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান ও ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। শরণখেলা রেঞ্জের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, এলাকাবাসী বনের মধ্যে আগুনের ধোঁয়া দেখে সোমবার সকাল ১০ টার দিকে আমাদের খবর দেয়। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। সিপিজি সদস্য, গ্রামবাসী, বন বিভাগের ভোলা ও ধান সাগর ক্যাম্পের সদস্যদের নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। বনের প্রায় দুই একর এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে আগুন জ্বলছে। আগুন নিয়ন্ত্রনে ফায়ার লাইন কাটা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ড এলাকায় বড় গাছের পাশাপাশি বলা গাছ ও লতাগুল্ম রয়েছে। তীব্র দাবদাহর কারনে আগুন লাগতে পারে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ইতিমধ্যে আগুনের কমপক্ষে ৪ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। বনের গাছপালার ওপর থেকে ধোঁয়ার কুন্ডুলি উঠছে। যা লোকালয় থেকেও দেখা যাচ্ছে। কাছাকাছি পানি না থাকায় আগুন খুব সহজে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। মশাল জ্বালিয়ে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করার সময় এ আগুন লেগেছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন। স্থানীয় সিপিজির টিম লিডার লুৎফর রহমান বলেন, সুন্দরবনে আগুন লাগলে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আমরা আগুন নেভানোর কাজ করছি। আশাকরি আজ মঙ্গলবার আগুন নেভানো সম্ভব হবে। এর আগে ৮ ফ্রেরুয়ারি বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর টহল ফাঁড়ির কাছে ২৭ নম্বর কর্ম্পাটমেন্টের বনে আগুন লেগে পুড়ে যায় ৫ শতক বনের গাছপালা ও লতাগুল্ম। তথ্যমতে, সুন্দরবনে ১৫ বছরে ২৮ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৬০ একর বনভূমি। ২০১৭ সালের ২৬ মে পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন আবদুল্লাহর ছিলায় অগ্নিকাণ্ডে ঘটনা ঘটে। ওই আগুনে প্রায় পাঁচ একর বনভূমির লতাগুল্ম পুড়ে যায়।
×