ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অস্তিত্ব সংকটে জলকদর খাল

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০

অস্তিত্ব সংকটে জলকদর খাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী ॥ দখলে দূষণে নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পতিত হচ্ছে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বঙ্গোপসাগরের মোহনা জলকদর খাল। জলকদর খালের উভয় পার্শ্বের দীর্ঘ ২৫ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। তাছাড়া নিত্যনৈমিত্য চলছে খালের দুই পাশে দখলের হিড়িক। দখলদারদের রাজত্বে বিলীনের পথে ঐতিহ্যবাহী এই খালটি। অপরদিকে জেলেদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন সাগর ও নদী কেন্দ্রিক হওয়ায় জলকদর খালের অস্তিত্ব হারিয়ে যাওয়ার ফলে জেলে পল্লীর বাসিন্দারা কাঁদছে নিভৃতে। যেন দেখার কেউ নেই! আজ বুধবার সকালে দেখা গেছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের পশ্চিম চাম্বল বাংলা বাজার এলাকায় ঐতিহ্যবাহী জলকদর খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। জনগুরুত্বপূর্ণ এই খালটি দিয়ে প্রতিদিন মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকা বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে থাকে। একসময় এই খাল বেয়ে পানি পথে উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণ চট্টগ্রাম শহর সহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করলেও বর্তমানে এই খালটির অধিকাংশ দখলদারদের কবলে চলে যাওয়ায় এই খাল হয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করা আর সম্ভব হয় না। এ এলাকার অধিকাংশ জেলেরা এই খাল থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। বাঁশখালীর বুক বেয়ে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় মিশে যাওয়া এই খালটির বিভিন্ন অংশ স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা ফেলায় খালটির দুই পাশে অত্যান্ত সরু হয়ে গেছে। তেমনি ভাবে পশ্চিম চাম্বল বাংলা বাজার ঘাট এলাকায় জলকদর খালের অনেকাংশ দখল করে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করায় স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীদের অভিযোগ, স্থানীয় জাকের আহমদ ও কালু সওদাগর নামে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি জলকদর খালের বিপুল পরিমাণ জলীয় অংশ দখল করে তথায় বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না এলাকাবাসীরা। এলাকাবাসীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৬ নবেম্বর) সকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জলকদর খালের বিশাল জলীয় অংশ দখলে নিয়ে ইতিমধ্যে ৫ তলা বিশিষ্ট ভবন গড়ে তোলা হয়েছে। ওই ভবনের নির্মাণ কাজ এখনো চলমান রয়েছে। খালের বুক ছিড়ে এভাবে ভবন গড়ে তোলায় স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের মাঝে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা বলেন, ‘জলকদর খাল করে বাঁশখালীতে অনেক অংশে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। অবৈধদারদের উচ্ছেদে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে লিখিত পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। শীঘ্রই জেলা পরিষদের নির্দেশক্রমে জলকদর খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
×