ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যুপথ যাত্রী স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছে না নারী হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ২৮ নভেম্বর ২০২০

মৃত্যুপথ যাত্রী স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছে না নারী হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক

সুবল বিশ্বাস, মাদারীপুর ॥ দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে দেশের জন্য খেলাধুলা করেন নারী হ্যান্ডবল কোচ ও বিজিএমসি’র নিয়মিত খেলোয়াড় কবিতা রানী মালো। করোনাকালে চাকুরী হারিয়ে মৃত্যুপথ যাত্রী স্বামী ফুটবল খেলোয়াড় গোপাল চন্দ্র দাসকে নিয়ে চোখের জলে হাবুডুবু খাচ্ছেন তিনি। অথচ তার এই দুর্দিনে পাশে নেই কোন সংগঠন। অভাব, অনটনের সংসারে স্বামীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা তার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য সহায়তা, আর নিজের একটি কর্মসংস্থানের দাবী জানিয়েছেন নারী এই হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে মাঠে খেলাধুলা শুরু করেন মাদারীপুর শহরের কাঠপট্টি এলাকার কবিতা রানী মালো। পরে ২০০২ সালে বিজিএমসিতে খেলার সুযোগ পান নারী হ্যান্ডবল খেলোয়াড় হিসেবে। সেখান (বিজিএমসি) থেকে চলতি বছরেও খেলাধুলা করে প্রতিমাসে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা সম্মানী পেতেন কবিতা। কিন্তু করোনা দুর্যোগে গত তিনমাস ধরে বন্ধ হয়ে গেছে খেলাধুলা। একই সাথে বন্ধ তার সম্মানী ভাতা। এতে একদিকে সংসার চালানো যেমন দায়, অন্যদিকে টিবি ও কিডনি রোগে আক্রান্ত মৃত্যুশয্যায় শায়িত স্বামীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা তার জন্য কষ্টসাধ্য। বিভিন্ন সময়ে জেলা ও দেশের জন্য খেলে পেয়েছেন নানা সম্মাননা। প্রাপ্তির শোকেসে আছে নানা অর্জন। যে মানুষটি পরিবার-পরিজন রেখে খেলাধুলা করে এতো কিছু করেছেন; অথচ, আজ তার এই দুর্দিনে পাশে নেই কোন সংগঠন। বর্তমানে স্বামীকে নিয়ে মাদারীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালেও অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না কবিতা। সবার কাছে আর্তি জানিয়েছেন সাহায্যের। মাদারীপুর হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টারের সহকারী প্রশিক্ষক (কোচ) কবিতা রানী মালো বলেন, ‘দেশের জন্য খেলাধুলা করে ২০০২ সালে বিজিএমসি থেকে হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছি। এছাড়া বেক্সিমকোতে পর পর ৪ বার চ্যাম্পিয়নশীপ লাভ করেছি। এতো কিছুর পরে কি পেলাম?’ কবিতার স্বামী ফুটবল খেলোয়াড় গোপালের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। পরিবারে ৭ম শ্রেণিতে পড়–য়া ছেলে ও ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়–য়া এক মেয়ে রয়েছে। একদিকে সংসার খরচ ও অন্যদিকে স্বামীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করা দুটোই এখন কষ্টসাধ্য। এক্ষেত্রে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেনএই কৃতি খেলোয়াড় ও নারী হ্যান্ডবল কোচ । মাদারীপুরের পুলিশ সুপার ও হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টারের সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান, নারী এই হ্যান্ডবল প্রশিক্ষকের মনোবল ধরে রাখতে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে। এক্ষেত্রে হ্যান্ডবল ট্রেনিং সেন্টার ও জেলা পুলিশ ইউনিট থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা দেয়া হবে। মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রিড়া সংস্থার সভাপতি ড. রহিমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কবিতা রানী মালোর স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রাথমিক ক্ষক্ষুদ্র পরিসরে সহায়তা দেয়া হয়েছে। তিনি চাইলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সহায়তা করা হবে।’
×