ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিবিসির দৃষ্টিতে ১০০ নারী ॥ এবার তালিকায় দুই বাংলাদেশী

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২৫ নভেম্বর ২০২০

বিবিসির দৃষ্টিতে ১০০ নারী ॥ এবার তালিকায় দুই বাংলাদেশী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বিবিসি বলেছে, এবার একশ’ নারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তারা যে বিষয়টিতে হাইলাইট করেছে তা হলো-মহামারীর এই কঠিন সময়ে যারা পরিবর্তন আনতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং কাজের মাধ্যমে নিজেদের আলাদা করতে সক্ষম হয়েছেন। এই তালিকায় আছেন ফিনল্যান্ডের কোয়ালিশন সরকার-যার প্রতিটি সদস্য নারী, তার প্রধান স্যান্না ম্যারিন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস টিকা গবেষণা দলের প্রধান সারাহ গিলবার্ট। পাকিস্তানী অভিনেত্রী মাহিরা খান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দারিদ্র্য বিমোচন বিষয়ক বিশেষ সহকারী সানিয়া নিশতার, ভারতের নাগরিকত্ব আইনবিরোধী আন্দোলনের অংশ ৮২ বছর বয়সী বিলকিস বানুসহ আরও অনেক সুপরিচিত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে এ তালিকাতেই ঠাঁই পেয়েছেন বাংলাদেশের রিনা আক্তার ও রিমা সুলতানা রিমু। রিনা আক্তারের সম্পর্কে বিবিসির বর্ণনায় বলা হয়েছে, মাত্র আট বছর বয়সে তার এক আত্মীয় তাকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল। সেখানেই তিনি বেড়ে ওঠেন ও পরে যৌনকর্মীতে পরিণত হন। কিন্তু এখন তিনি অন্য যৌনকর্মীদের জীবনমানের উন্নয়নে কাজ করছেন। করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে রিনা ও তার টিম ঢাকায় প্রতি সপ্তাহে অন্তত চারশ’ যৌনকর্মীকে খাবার সরবরাহ করেছেন। এসব যৌনকর্মী মহামারীর কারণে চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েছেন। রিনা আক্তার বিবিসিকে বলেছেন, ‘লোকজন আমাদের পেশাকে ছোট করে দেখে, কিন্তু আমরা এটি করি খাবার কেনার জন্য। আমি চেষ্টা করছি, যাতে এই পেশার কেউ ক্ষুধার্ত না থাকে এবং তাদের মেয়ে বাচ্চাদের যেন এ কাজ করতে না হয়।’ অন্যদিকে রিমা সুলতানা রিমু একজন শিক্ষক এবং তিনি কক্সবাজার ভিত্তিক ‘ইয়ং উইমেন লিডার্স ফর পিস’ এর একজন সদস্য। এ কর্মসূচীটি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব উইমেন পিস বিল্ডার্স’র অংশ- যার মূল উদ্দেশ্য সংঘাতসঙ্কুল দেশগুলো থেকে আসা তরুণ নারীদের ক্ষমতায়ন করা, যাতে তারা নেতৃত্বদান এবং শান্তির এজেন্টে পরিণত হতে পারেন। রিমা তার মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতি মোকাবেলায়। রোহিঙ্গা শরণার্থী বিশেষ করে নারী ও শিশুদের যাদের শিক্ষার সুযোগ নেই তাদের জন্য লিঙ্গ সংবেদনশীল ও বয়সভিত্তিক সাক্ষরতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তিনি। রেডিও ব্রডকাস্ট ও থিয়েটার পারফরমেন্সের মাধ্যমে তিনি নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করেছেন তিনি। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে লিঙ্গ সমতা আনতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। অধিকার আদায়ের জন্য নারীর শক্তিতে আমি বিশ্বাস করি।’ তালিকায় উল্লেখ করার মতো আরও যারা আছেন-মাহিরা খান ॥ পাকিস্তানের অভিনেত্রী। তিনি যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার। রং ফর্সাকারী ক্রিম প্রত্যাখ্যান করা মাহিরা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করাকে সমর্থন করেন। তিনি সামাজিক সমস্যা সংক্রান্ত ইস্যুগুলোকে মোকাবেলা করতে এগুলো সিনেমা ও টিভিতে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে আগ্রহী। তিনি জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন। ড. সানিয়া নিশতার ॥ মোবাইল ব্যাংকিং, ব্যাংক এ্যাকাউন্ট এবং এমন আর কিছু মাধ্যমে লাখ লাখ পাকিস্তানীর জীবনমান উন্নত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. সানিয়া নিশতার। বিলকিস বানু ॥ ৮২ বছর বয়সী ভারতের বিলকিস বানু বেশ আলোচনায় এসেছিলেন নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নিয়ে। ভারতীয় সাংবাদিক ও লেখক রানা আইয়ুুব শাহীনবাগের মুসলিমদের ধারাবাহিক কর্মসূচীতে অংশ নেয়া এই নারীকে ‘প্রান্তজনের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এছাড়া একশ’ নারীর তালিকায় আরও যাদের নাম আছে তাদের মধ্যে আছেন ইথিওপিয়ার ফুটবলার লোজা আবেরা জেইনোর, সিয়েরা লিওনের মেয়র ইয়ভনে আকি সাভিয়্যের, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রী সারাহ আল আমিরি, সিরিয়ার চলচ্চিত্র নির্মাতা ওয়াদ আল কাতিয়াব, যুক্তরাষ্ট্রের অভিনেত্রী জেন ফনডা এবং যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানী সারাহ গিলবার্ট।
×