ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কক্সবাজার পুলিশে বদলি বেড়ে ১৩৪৭

প্রকাশিত: ২২:০২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

কক্সবাজার পুলিশে বদলি বেড়ে ১৩৪৭

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ জেলা পুলিশকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। আর এর জন্য কক্সবাজারে বিভিন্ন দায়িত্ব থাকা কর্মকর্তা থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সকলকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত পর্যন্ত এই বদলির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৪৭ জনে। কক্সবাজারের নবাগত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বিষয়টি জানিয়েছেন। বদলি হওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন আটজন শীর্ষ কর্মকর্তা, ৫৩ পরিদর্শক, ১৩৯ উপ-পরিদর্শক (এসআই), ৯২ সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ১ হাজার ৫৫ জন নায়েব ও কনস্টেবল। সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার নতুন করে কক্সবাজারের আট থানাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বে থাকা ১৩৯ এসআই, ৯২ এএসআই, ১ হাজার ৫৫ নায়েব ও কনস্টেবলকে ভিন্ন রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বদলি করা হয়েছে ৫৩ পরিদর্শককে। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, বদলি হওয়া শূন্য পদ পূরণে শুক্রবার চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে যোগ দিয়েছেন ৫৩ পুলিশ পরিদর্শক, ২১৫ এসআই-এএসআই ও ৭৩৪ কনস্টেবল। এর মধ্যে গত ১৬ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেনকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়। আর ঝিনাইদহের এসপি হাসানুজ্জামানকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের দায়িত্ব দেয়া হয়। নবাগত এসপি বুধবার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার এসপি মাসুদ হোসেন কক্সবাজার থেকে বিদায় গ্রহণ করেন। জানা যায়, গত ১৬ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকে রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানকে কক্সবাজারে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ জেলা পুলিশের শীর্ষ সাত কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা পুলিশকে ঢেলে সাজানো হবে। পর্যায়ক্রমে এসআই এবং এএসআইসহ কনস্টেবল পর্যায়ক্রমে বদলি করা হবে। কক্সবাজারে পোস্টিং হওয়া অফিসারগণ শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম রেঞ্জে যোগদান করেছেন। কক্সবাজারে নতুন পোস্টিং হওয়া আট থানার আট অফিসার ইনচার্জ তথা ওসি হচ্ছেন- নওগাঁ থেকে মোঃ আব্দুল হাই, গোপালগঞ্জ থেকে শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের, নীলফামারী থেকে কেএম আজমিরুজ্জামান, ডিএমপি ঢাকা থেকে মোঃ সাইফুর রহমান মজুমদার, মৌলভীবাজার থেকে মোঃ জালাল উদ্দিন, সাতক্ষীরা থেকে শেখ মুনির উল গিয়াস, সিরাজগঞ্জ থেকে মোৎ হাফিজুর রহমান ও সুনামগঞ্জ থেকে আহম্মদ সনজুর মোরশেদ। এছাড়া কক্সবাজার জেলার জন্য যে ২৯ পুলিশ পরিদর্শক পোস্টিং হয়েছেন তারা হলেন- ময়মনসিংহ থেকে খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে মোঃ আশরাফুল কবির খান, নেত্রকোনা থেকে আনসারুল ইসলাম, সিআইডি ঢাকা থেকে মোঃ নাজমুল আলম চৌধুরী, এসবি ঢাকা থেকে মোঃ রুকনুজ্জামান, এসবি ঢাকা থেকে মাসুদুর রহমান, এসবি ঢাকা থেকে হাবিবুর রহমান, পিবিআই ঢাকা থেকে মোঃ জুয়েল ইসলাম, সিআইডি ঢাকা থেকে এবিএম মাইনুল হাসান, সিআইডি ঢাকা থেকে মোঃ আবদুল হালিম, সিআইডি ঢাকা থেকে বিপুল চন্দ্র দে, নারায়ণগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ থেকে চন্দন কুমার চক্রবর্তী, পিবিআই ঢাকা থেকে ওয়ালী উদ্দিন আকবর, ঢাকা জেলা থেকে কানন সরকার, পিবিআই ঢাকা থেকে শেখ মোঃ আলী, মানিকগঞ্জ থেকে নুর মোহাম্মদ, মুন্সীগঞ্জ থেকে গাজী সালাউদ্দিন, রাজশাহী থেকে মোঃ আনোয়ার হোসেন, ফরিদপুর জেলা থেকে মোঃ আশরাফ হোসেন, বাগেরহাট থেকে মোঃ মাহতাবুর রহমান ও মোঃ সেলিম উদ্দিন, কুষ্টিয়া থেকে আবদুল আলীম, রাজশাহী থেকে ফরহাদ আলী, বগুড়া থেকে আশিক ইকবাল, পিরোজপুর থেকে কামাল হোসেন, মৌলভীবাজার থেকে অরুপ কুমার চৌধুরী, সিলেট থেকে মোঃ লুৎফুর রহমান, গাইবান্ধা থেকে মোঃ এমরানুল কবির ও পঞ্চগড় থেকে মোঃ রবিউল ইসলাম। সূত্র মতে, চট্টগ্রাম রেঞ্জে যোগদানের প্রক্রিয়া শেষে এসব পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, কক্সবাজার জেলা পুলিশকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হচ্ছে। এর জন্য শুরু হয়েছে ব্যাপক রদবদল। পুলিশ সদর দফতরের সিদ্ধান্ত মতে, দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার জেলায় কর্মরত রয়েছেন এমন কনস্টেবল থেকে কর্মকর্তা সবাইকে সরিয়ে নেয়া শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, অনেকটা কক্সবাজার জেলা পুরোটার পুলিশে পরিবর্তন করা হবে। এটাকে নিয়মিত বদলি অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ডিআইজি। উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব) সিনহা মোঃ রাশেদ খান নিহতের ঘটনা ঘটে। নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ৫ আগস্ট বাদী হয়ে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে। আদালত থেকে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয়েছে র‌্যাবকে। এ ঘটনায় ওসি প্রদীপ-লিয়াকতসহ টেকনাফ থানার ৮ পুলিশ, আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের তিন সদস্যসহ সিনহার বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় রুজুকৃত মামলার স্থানীয় তিন সাক্ষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পর জেলা পুলিশকে ঢেলে সাজাতে সদর দফতরের এই পরিকল্পনা বলে জানা গেছে।
×