ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমদানি বাণিজ্যে খরা কাটছে

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ৪ আগস্ট ২০২০

আমদানি বাণিজ্যে খরা কাটছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসের মধ্যেও হঠাৎ করে আমদানিতে ইতিবাচক ধারা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানির হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে বিভিন্ন দেশ থেকে ৪৮০ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এই অংক মে মাসের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি। আর গত বছরের জুন মাসের চেয়ে ২৪ শতাংশ বেশি। গত মে মাসে ৩৫৩ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল। তার আগের মাস এপ্রিলে হয়েছিল মাত্র ২৮৫ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, যা এক মাসের হিসাবে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৫৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম। যদিও ২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ে আমদানি কমেছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। এর ফলে অর্থনীতির ভালো সূচকে প্রবাসী আয়ের সঙ্গে যুক্ত হলো আমদানিও। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে অনেক দেশের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিশেষ করে চীনের বাজার। এর ফলে ঋণপত্র খোলা হলেও পণ্য আসেনি। এসব পণ্য জুন মাসে এসেছে। আবার করোনাভাইরাসের কারণে সুরক্ষাসামগ্রী আমদানিও বেড়েছে। জানা গেছে, অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে গত অর্থবছরে রপ্তানি কমে প্রায় ১৭ শতাংশ। শুধু জুনেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আড়াই শতাংশ কম রপ্তানি হয়। আর করোনার কারণে সরকারের রাজস্ব আদায়ও মন্থর হয়ে পড়ে। ফলে গত মে মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় কমে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এদিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রিও কমে গেছে। ফলে ব্যাংকঋণমুখী হয়ে পড়েছে সরকার। আর গত অর্থবছরে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে হয় ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অর্থনীতির গতি ফেরাতে হলে রপ্তানির পাশাপাশি আমদানিতেও ভালো প্রবৃদ্ধি হতে হবে। কারণ, পোশাকের কাঁচামালের প্রায় পুরোটাই আমদানি-নির্ভর। কাঁচামাল না এলে পণ্যের উৎপাদন ব্যাহত হবে, যার প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানসহ অর্থনীতির নানা সূচকে। জানা গেছে, গত অর্থবছরে বিভিন্ন দেশ থেকে ৫ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম। ওই অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছিল ৫ হাজার ৯৯১ কোটি ডলারের। যদিও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য আমদানিতে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ২৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভোক্তা পণ্য ছাড়া সব ধরনের আমদানিতে নেতিবাচক ধারা ছিল। মূলধনি যন্ত্রপাতি সাড়ে ৮ শতাংশ, জ্বালানি ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ, শিল্পের কাঁচামালে ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ ও অন্যান্য পণ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ কম ঋণপত্র নিষ্পত্তি হয়। তবে ভোক্তা পণ্য আগের অর্থবছরের চেয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ পণ্য আমদানি নিষ্পত্তি হয়।
×