ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জনপ্রতিনিধি কে হবেন সেটি এখন আগেই ঠিক করে রাখা হয় -রিজভী

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ২৯ জুলাই ২০২০

জনপ্রতিনিধি কে হবেন সেটি এখন আগেই ঠিক করে রাখা হয় -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে এখন কোথায় কে জনপ্রতিনিধি হবেন সেটি আগেই ঠিক করে রাখা হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার সকালে মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে রাজধানীর অদূরে শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলের উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বন্যা কবলিত এলাকায় অনেক মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষ না পাচ্ছে থাকার জায়গা, না পাচ্ছে খাবার। কিন্তু সরকার তাদের ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে না। কোন কোন কোন এলাকায় দিলেও লোক সংখ্যার তুলনায় অপর্যাপ্ত। তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাড়ানোর আহ্বান জানান। রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশে এখন নির্বাচনের জন্য সরকারি দলের পক্ষ থেকে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয় মাত্র। প্রকৃত ভোটাররা এখন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না। মানুষ তাদের অধিকার প্রয়োগের বিষয়ে চিন্তা করতে চায়। তারা সেই চিন্তাার কথাগুলো বলতে চায়, লিখতে চায়। কিন্তু সরকার সেটা হতে দেবেন না। তারা মানুষের স্বাধীনতা হরণ করেছে। রিজভী বলেন, দেশে এখন বিনা বাধায় দিনের ভোট রাত্রে করা হয়। আর তা বলতে গেলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার চালানো হয়। তবে সরকারের জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। বিএনপি এখন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করছে। যেই গণতন্ত্র বর্তমান সরকার কেড়ে নিয়েছে। রিজভী বলেন, সরকার জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। আজকে যদি মতপ্রকাশের জন্য ফেসবুকে কেউ কিছু লিখেন, দিনে রাতে যেকোনও সময় সাদা পোশাকধারীরা তাকে তুলে নিয়ে যাবে। দেশে এখন ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যায় না। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করতে হবে, আন্দোলন- সংগ্রাম করতে হবে। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে লড়াই করছি। এই লড়াই করতে গিয়ে শুধু আমি নই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ অসংখ্য মানুষ কারাগারে গেছেন। অনেক নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। সরকারের রোষানলে পরে অনেক মানুষ দেশছাড়া হয়েছেন। রিজভী বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনীতি ছিল দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। তার আগের সরকার সংবাদপত্রগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল, কয়েকটি পত্রিকা ছাড়া কোন পত্রিকা চলতে দেয়নি। এক দল এক নেতা ছাড়া কথা বলা যাবে না এমন পরিস্থিতিতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে এগুলো পত্রিকাগুলো চালু করে দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান আরও একটি কাজ করেছিলে- উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি। দু’একটা ফ্লাইওভার নির্মাণ করে আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো উন্নয়নের জোয়ারের কথা বলেননি। রিজভী বলেন, বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিক জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করার কর্মসূচিও বিএনপি পালন করছে। আমরা আন্দোলনের পাশাপাশি জিয়াউর রহমানের উতপাদন ও উন্নয়নের রাজনীতির কাজও করছি। কিন্তু আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ফ্লাইওভার নির্মানের কাজ করে আর নিজেদের পকেটে ভারী করে এখন কানাডায় বাড়ি বানান, সেকেন্ড হোম করেন মালয়েশিয়ায়। কিন্তু জিয়াউর রহমানের নীতি ছিলো দেশের র্তণমূলের কর্মহীন মানুষদের স্বয়ংসম্পূর্ণ করা, আত্মানির্ভরশীল করা। এ জন্য তিনি মাছ চাষ প্রকল্প, কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ দেশকে নানা দিক থেকে অগ্রসর করেছেন। জিয়াউর রহমানের এই নানা দিক অগ্রগতির ধারাবাহিকতার জন্য আমাদের দল অঙ্গসংগঠনসমূহ কাজ করছে। তারপরও আমাদের ওপর মামলার খড়গ, জুলুমের খড়গ নেমে আসছে। আড়িয়াল বিলে মাছের পোনা অবমুক্ত করার সময় রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পদক মীর সরাফত আলী সপু, মৎসজীবী দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাহতাব, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, সংগঠনের নেতা সেলিম মিয়া, জাকির হোসেন খান,মৎস্যজীবী দল মুন্সিগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
×