ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জে দেশীয় মাছ রক্ষায় কার্যক্রম অব্যাহত

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ২৭ জুন ২০২০

হবিগঞ্জে দেশীয় মাছ রক্ষায় কার্যক্রম অব্যাহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জ জেলার হাওর ও প্রাকৃতিক জলাশয়ে দেশীয় মাছ রক্ষায় কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলা ও উপজেলা মৎস্য অফিস প্রাকৃতিক জলাশয়ের দিকে গুরুত্ব দিয়েছে। সেই সাথে মৎস্য বিভাগের উৎসাহে ব্যক্তি উদ্যোগে বাণিজ্যিভাবে মাছ চাষে বেকাররা আগ্রহী হচ্ছেন। এদিকে কারেন্ট জালের ব্যবহার বন্ধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভিন্ন সময়ে উপজেলা ও জেলা শহরে দোকানপাটে অভিযান চালিয়ে কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে নষ্ট করছেন। সাথে কারেন্ট জাল মজুদের অপরাধে জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া দেশীয় নানা প্রজাতি মাছের পোনা শিকারীদের কাছ থেকে জব্দ করে প্রাকৃতিক জলাশয়ে অবমুক্ত করছে জেলা ও উপজেলা মৎস্য অফিস। এসব পদক্ষেপের ফলে ইতোমধ্যে হাওর ও নদী, খাল, বিল, ডোবাসহ প্রাকৃতিক জলাশয়ে অনেকাংশে কারেন্ট জালের ব্যবহার কমেছে। তার সাথে বেড়েছে দেশীয় মাছের প্রজনন। এভাবে চলছে হবিগঞ্জের হাওর ও প্রাকৃতিক জলাশয়ে দেশীয় মাছের বাম্পার উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহজাদা খসরু। তিনি জানান, এ বছর বৃষ্টি ও পানি আসতে কিছুটা দেরি হওয়ায় দেশীয় মাছের প্রজননে বিলম্ব হয়। তবে এতে বোরো ধানের জন্য বিরাট উপকার হয়েছে। বর্তমানে হাওর এলাকায় বৃষ্টি ও পানি বদ্ধি পাওয়ায় টাকি, শোল, গজার, গুতুম ও কৈসহ বিভিন্ন মাছের ডিম থেকে পোনা বের হয়েছে। তবে হাওর এলাকায় দিনে ও রাতে দল বেঁধে লোকজন এক ধরনের জাল দিয়ে এসব পোনামাছ শিকার করছিল। এগুলো বন্ধ করতে হাওরে অভিযান চালানো হচ্ছে। বর্তমানে অনেকাংশে পোনা মাছ শিকার ও কারেন্ট জালের ব্যবহার কমে গেছে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা শাহজাদা খসরু। তিনি আরো জানান, মৎস্য অফিসের পরামর্শ পেয়ে অনেক বেকার যুবক ব্যক্তি উদ্যোগে নিজ নিজ বাড়িতে পুকুর খনন করে বাণিজ্যিক মাছ চাষে যুক্ত হয়েছে। তারা মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, মাছের পোনা শিকার বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। জব্দকৃত পোনা মাছ হাওরে অবমুক্ত করা হচ্ছে। তিনি জানান, সর্বশেষ ২২ জুন সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হবিগঞ্জ জেলা সদরের চৌধুরী বাজার এলাকায় মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ অনুসারে অবৈধ কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হতে বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কারেন্ট জাল গুদামজাতকরণে জড়িত থাকায় সুন্দলপুর ট্রেডার্স ও শিপ্রা ট্রেডার্স’র ৩ জনকে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ অনুসারে ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। জব্দকৃত কারেন্ট জাল সর্বসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়েছে। অন্যদিকে জেলার মাধবপুর উপজেলার মাধবপুর বাজারে অভিযান পরিচালনাকালে ৮৫০০০ মিটার কারেন্ট জাল উদ্ধার করা হয়। মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ অনুযায়ী ৪ (চার) জনকে ৪০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয় এবং সকলের উপস্থিতিতে জব্দকৃত জাল ধ্বংস করা হয়েছে।
×