ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বুধবার দেশটির পাঁচ হাজার ৬১১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত

ভারতে আক্রান্তে রেকর্ড

প্রকাশিত: ২৩:৩৫, ২১ মে ২০২০

ভারতে আক্রান্তে রেকর্ড

করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড গড়েছে ভারত। বুধবার দেশটির কর্মকর্তারা জানান, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে পাঁচ হাজার ৬১১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ছয় হাজার ৭৫০। এর মধ্যে তিন হাজার ৩০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই করোনায় নতুন করে আরও ১৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পিটিআই ও এনডিটিভি অনলাইনের। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে ৪২ হাজার ২৯৮ জন সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ, দেশটিতে করোনাভাইরাস থেকে পুনরুদ্ধারের হার বুধবার সকালে বেড়ে ৩৯ দশমিক ৬২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। ভারতের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র। এরপরই রয়েছে তামিলনাডু। সেখানে মঙ্গলবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬৮৮ জন। এ নিয়ে রাজ্যটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৪৪৮ জন। মঙ্গলবার পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের পর আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে দ্বিতীয় স্থানে ছিল গুজরাট। কিন্তু একদিনের মধ্যে গুজরাটকে টপকে গেল তামিলনাডু। গুজরাটে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ১৪০ জন। ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশে প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্য থেকে গিয়ে পৌঁছেছে। এখন এই পরিযায়ীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। রাজ্যের রাজধানী লৌখœ থেকে ১৯০ কিলোমিটার দূরে যে বাসটি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ফিরেছে, তাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কমপক্ষে ৫০ জনের সন্ধান মিলেছে। উত্তরপ্রদেশে এখনও পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত চার হাজার ৯২৬ জন। সেখানে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যায় শুক্রবারই চীনকে পেছনে ফেলেছে ভারত। ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, এদিন দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৫ হাজার ২১৫ জন। মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে চীনে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪ হাজার ৪৪ জন। করোনা আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে বিশ্বে এখন ভারতের অবস্থান ১১ নম্বরে। ভারতে করোনায় মৃত্যুর হার অবশ্য চীনের চেয়ে কম। চীনে মারা গেছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ করোনা রোগী। ভারতে মৃত্যু হয়েছে ৩ দশমিক ২ শতাংশের। দেশটিতে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৭ হাজার মানুষ। চীনে এখন ১০০ জনেরও কম কোভিড-১৯ রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। যদিও উহানে গত সপ্তাহে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। চীনে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৩৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৭৮ হাজার মানুষ। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ভারতে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন জারি করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইঙ্গিত দেন, আগামী ১৭ মের পরেও উঠছে না লকডাউন। ১৮ মে থেকে দেশে জারি হবে চতুর্থ ধাপের লকডাউন, ভারতে যাকে বলা হচ্ছে ‘লকডাউন ৪.০’। তবে লকডাউন জারি রেখেই বিভিন্ন জায়গায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রবণতা বিবেচনা করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেয়ার কথাও বিবেচনা করছে দেশটি। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক পথে ফিরতেই হবে, তাই প্রথমেই শিথিল করা হতে পারে বিমান ও স্থানীয় পরিবহনগুলো চলাচলে জারি রাখা নির্দেশিকা। অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপীয়ন ইউনিয়নের ডাকে করোনা সংক্রমণ নিয়ে ৬২ দেশের সঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্তের সমর্থন জানিয়েছে ভারতও। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত গোটা বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ লাখ ১৪ হাজার ২৪০ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৯১ জন।
×