ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে লিফটের নিচ থেকে চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার, আটক-৯

প্রকাশিত: ১৯:৪০, ২৮ এপ্রিল ২০২০

বরিশালে লিফটের নিচ থেকে চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার, আটক-৯

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগরীর কালিবাড়ি রোডের মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালের লিফটের নিচ থেকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডাঃ এমএ আজাদ সজলের (৪৭) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, ডাঃ আজাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের স্বরুপকাঠি উপজেলার সোহাগদল গ্রামে। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান ঢাকায় থাকেন। শেবাচিম হাসপাতালে চাকরির সুবাদে তিনি বরিশালেই থাকতেন। প্রাইভেট প্রাকটিসের পাশাপাশি মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালের সাত তলার একটি কক্ষে (ডরমিটরিতে) থাকতেন তিনি। পরিচালক আরও জানান, সোমবার দিবাগত রাত থেকে ডাঃ আজাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সকালে মমতা স্পেশালাইজড হাসপাতালের লিফটের নিচে তার মরদেহ পরে থাকতে দেখা যায়। এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি কোতোয়ালি) মোঃ রাসেল বলেন, চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মমতা হাসপাতালের নয়জন কর্মীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার তদন্ত ও বিভিন্ন আলামত উদ্ধারে থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই এবং সিআইডি পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন। মৃত চিকিৎসক আজাদের স্বজন ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন, আজাদের স্ত্রী ও দুই সন্তান ঢাকায় বসবাস করেন। এ কারণে প্রায় বছরখানেক যাবত তিনি নগরীর কালিবাড়ি রোডের মমতা হাসপাতালের সাত তলার একটি কক্ষে বসবাস করতেন। মঙ্গলবার রাতে সেহরির সময় তার স্ত্রী ঢাকা থেকে ফোনে যোগাযোগ করে না পাওয়ায় মমতা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার রুমে তালা দেওয়া দেখে পুলিশকে খবর দেয়। সকালে পুলিশের উপস্থিতিতে ওই কক্ষের তালা ভাঙা হয়। এরপর খোঁজাখুঁজি করে হাসপাতালের লিফটের নিচে তার মরদেহ দেখতে পান মমতা হাসপাতালের এক কর্মী। পরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। তবে এ মৃত্যুকে প্রাথমিকভাবে সন্দেহজনক বলে মনে করছেন স্বজনরা, তারা ঘটনার তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। যদিও এ মৃত্যু দুর্ঘটনা হতে পারে বলে ধারণা করছেন মমতা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ জহিরুল হক মানিক। এদিকে ঘটনাস্থলে থাকা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক নিখোঁজের বিষয়টি সকালে তাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়। এরপর তারা হাসপাতালে এসে অনুসন্ধান চালিয়ে লিফটের নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ও চশমা উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে তদন্ত চলছে। ওসি আরও বলেন, লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি মমতা হাসপাতালের লিফটম্যান, হাসপাতালের শিফট ইনচার্জ ও কর্তব্যরতের মধ্যে নয়জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাস্থলে হাসপাতালের স্টাফরা বলেন, সোমবার সন্ধার পর থেকেই স্যারের কোন সন্ধান ছিলোনা। এমনকি স্যারের সপ্তম তলার ৮নং কক্ষে ইফতারী নিয়ে গেলে কক্ষ বন্ধ থাকায় তার কক্ষের সাথে ইফতারী ঝুলিয়ে রেখে আসা হয়। এদিকে সোহাগদল গ্রাম থেকে সংবাদ পেয়ে ছুটে আসা নিহত চিকিৎসকের খালাতো ভাই শিহাব আহমেদ খোকন বলেন, ডাঃ এমএ আজাদ সজলের স্ত্রী কহিনুর বেগম ১ পুত্র ও ১ কন্যাকে নিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বসবাস করেন।
×