ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চা পানে কি করোনা সারে!

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ২৮ মার্চ ২০২০

 চা পানে কি করোনা  সারে!

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে বিশ্বজুড়ে আতঙ্কিত মানুষ হন্যে হয়ে খুঁজছে ভাইরাসটির প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক। কোভিড-১৯ নামে রোগটি ঠেকানো বা তা থেকে সেরে ওঠার ওষুধের সন্ধানে রয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। এদিকে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে অবরুদ্ধ মানুষ ঘরবন্দী হয়েও খুঁজছেন নানা টোটকা, যেগুলোর সত্যতা যাচাই না করেই ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম- ফেসবুক, টুইটার ও হোয়াটসএ্যাপে। খবর ওয়েবসাইটের। নিয়মিত চা পানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে ‘মুক্তি মিলবে’ বলে একটি বার্তা এরইমধ্যে অনেকের কাছে পৌঁছে গেছে এভাবেই; অনেকে তা বিশ্বাস করে তিন বেলা চা পান করাও শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি পাবার এই টোটকাটিকে স্রেফ গুজব হিসেবেই তুলে ধরে বিবিসি বলছে, সিএনএনের বরাত দিয়ে যে বার্তাটি ছড়িয়ে পড়েছে তার কোন ভিত্তি নেই। সিএনএন এমন কোন প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। কল্পিত ওই প্রতিবেদনে চীনা চিকিৎসক লি ওয়েনল্যাংকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, রোগীদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তিনি একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিথাইলজ্যান্থিন, থিওব্রোমাইন, থিওফাইলিন শরীরে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে তা করোনাভাইরাসের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সক্ষম। আর এই তিনটি উপাদানই মিলবে চা পানে। হোয়াটসএ্যাপে প্রচারিত ওই বার্তাটিতে এও দাবি করা হয়, করোনাভাইরাস মোকাবেলা করার মূলমন্ত্রও এই চা। সেখানে হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও ওই সময় চা পান করেছিল নিয়মিত। গুগল ট্রেন্ডে গত ১৯ মার্চ থেকে এই চা টোটকা নিয়ে খোঁজ বেড়ে গেছে বলে জানাচ্ছে ভারতের রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড ডটকম বৃহস্পতিবারের এক প্রতিবেদন। তারা বলছে, গত ২৪ মার্চ গুগলে এই খোঁজ ছিল তুঙ্গে। চায়ের পাশাপাশি লি ওয়েনল্যাং নিয়েও অনেককে আগ্রহী দেখা গেছে। ডাঃ লি ছিলেন উহান কেন্দ্রীয় হাসপাতালের একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ। নতুন করোনাভাইরাসের আশঙ্কার দিক তুলে ধরে তিনি চীনকে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। সেই ভাইরাসে তিনি নিজেও আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কিন্তু লি ওয়েনল্যাং এসব নিয়ে গবেষণা করছিলেন এমন কোন প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে বিবিসি। তারা বলছে, চা, কফি ও চকলেটে মিথাইলজ্যান্থিন পাওয়ার তথ্যটি সঠিক হলেও তা দিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ বা সহজে সেরে ওঠার কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনও মিলেনি। ফেব্রুয়ারিতে চীনের সংবাদমাধ্যমও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হওয়া বার্তাটি নিয়ে প্রতিবেদন করেছিল; যেখানে তারা একে গুজব বলেই তুলে ধরে।
×