ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রিসবেন টেস্টে আসাদের সংগ্রামী ইনিংসেও ২৪০ রানে থেমেছে পাকদের প্রথম ইনিংস

অসি পেস তোপে বিপর্যস্ত পাকরা

প্রকাশিত: ১১:৫০, ২২ নভেম্বর ২০১৯

অসি পেস তোপে বিপর্যস্ত পাকরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের সামনে পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানরা কতখানি অসহায় তার স্বরূপ দেখা গিয়েছিল টি২০ সিরিজেই। টেস্ট সিরিজে তারা যে আরও ত্রাস ছড়াবেন তা বোঝাই যাচ্ছিল। সেটিই সত্য হয়েছে, ব্রিসবেন টেস্টের প্রথমদিনটা অসি পেসারদের স্বর্গরাজ্য হয়ে ওঠে। দাপুটে অসি পেসারদের আগ্রাসনের মুখে শুধু একাই লড়াই করেছেন আসাদ শফিক। তিনি খেলেছেন ৭৬ রানের লড়াকু ইনিংস। এরপরও বৃহস্পতিবার প্রথমদিন শেষ হওয়ার আগেই ২৪০ রানে প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেছে পাকিস্তানের। সামান্য কয়েক ওভারের জন্য আর ব্যাট করতে নামেনি স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। সবচেয়ে গতিধর মিচেল স্টার্ক ৪টি এবং জশ, প্যাট কামিন্স ৩টি ও হ্যাজলউড ২টি উইকেট নিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন সফরকারীদের ইনিংস। টস জিতে পেস সহায়ক উইকেটে প্রথমে ব্যাটিং করার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়া আজহার আলী। শুরুটাও তিনি শান মাসুদকে নিয়ে দুর্দান্ত করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের হতাশ করে লাঞ্চ বিরতি করতে গেছেন তারা অপরাজিত থেকে। দারুণ ধৈর্য দেখিয়েছেন তারা, মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থেকেছেন। ২৭ ওভারে ৫৭ রান সেই ইঙ্গিত দেয় ভালভাবেই। এই বিরতিই যেন কাল হয়ে যায় পাকদের জন্য। নবউদ্যোমে ঝাঁপিয়ে পড়েন অসি পেসাররা। শুরুটা করেন কামিন্স ও হ্যাজলউড। লাঞ্চ বিরতির পর প্রথম ৬.২ ওভারেই তারা তুলে নেন শান মাসুদ (২৭) ও আজহারকে (১০৪ বলে ৩৯)। দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পরই ধস নামতে শুরু করে পাক ইনিংসে। চার নম্বরে নেমে আসাদ দেখেন স্টার্কের গতির দাপটে তার সতীর্থদের একে একে বিদায় নেয়া। চা বিরতির বেশ খানিক্ষণ আগে সেই বিধ্বংসী চেহারায় ক্ষান্ত দিয়েছেন কামিন্স-স্টার্ক ও হ্যাজলউডরা। কিন্তু হারিস সোহেল (১), বাবর আজম (১) ও ইফতিখার আহমেদ (৭) সাজঘরে ফিরে গেছেন। আসাদের সঙ্গে মোহাম্মদ রিজওয়ান যোগ দিয়ে প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম হয়েছেন। এরপরও লাঞ্চ বিরতি করতে যাওয়া পাকিস্তান যেখানে বিনা উইকেটে ৫৭ রানে ছিল, তারা চা বিরতিতে গেছে ৫ উইকেটে ১২৫ রান নিয়ে। এই সেশনে ২৫ ওভারেই অবশ্য ৬৮ রান এসেছে, কিন্তু ৫টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট খুইয়ে সংগ্রামও শুরু হয়ে গেছে পাকদের। আসাদের সঙ্গে রিজওয়ানের জুটি ৪৯ রানের বেশি যায়নি। চা বিরতির পর তৃতীয় ওভারেই রিজওয়ান ৩৪ বলে ৭ চারে ৩৭ রান করে বিদায় নিয়েছেন কামিন্সের বলে। অবশ্য কামিন্সের এই বলটি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বলটি ‘নো’ ছিল কিনা তা রিপ্লেতে দেখার পর সন্দেহ তৈরি হয়েছে। অবশ্য আম্পায়াররা ওভারস্টেপিং নিয়ে সন্দেহ থাকলেও সেটিকে ‘নো’ ডাকেননি। সেই আউটটির পর অসি পেসারদের পরীক্ষায় ফেলেছেন মাঝে মাঝে ব্যাট করতে সক্ষম ইয়াসির শাহ। তিনি ৮৩টি বল ঠেকিয়ে ২৬ রান করেছেন, ফলে সপ্তম উইকেটে ৮৪ রানের জুটি হয়েছে তার আর আসাদের মধ্যে। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে তখনই স্টার্ক ভেঙ্গে ফেলেছেন ইয়াসিরের স্টাম্প। তারপর পাক ইনিংস মুখ থুবড়ে পড়া ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। শেষ ১৩ রানেই পাকিস্তানের বাকি ৪ উইকেট তুলে নেন অসি পেসাররা। আসাদও ১৩৪ বলে ৭ চারে ৭৬ রান করার পর কামিন্সের শিকার হয়েছেন। ৮৬.৩ ওভারে ২৪০ রানেই শেষ পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস। তিন পেসার ভাগাভাগি করেছেন ৯ উইকেট (স্টার্ক ৪, কামিন্স ৩ ও হ্যাজলউড ২)। একটিমাত্র উইকেট জুটেছে অফস্পিনার নাথান লেয়নের ভাগ্যে।
×