ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে মার্কিন অর্থনীতিতে প্রভাব

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে মার্কিন অর্থনীতিতে প্রভাব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গেল এক বছরে বেশ কয়েকবার চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব অবসানের আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্প। তবে বাস্তবে তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি ওয়াশিংটন। বিপরীতে বড় হয়েছে বাড়তি শুল্কারোপের তালিকা। চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে মার্কিন অর্থনীতিতে। ২০১৮ সালের শুরু থেকে প্রায় প্রতি প্রান্তিকেই কমেছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি। কমেছে নতুন কর্মসংস্থানের হারও। অন্যদিকে সম্ভাব্য হুমকি মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করছে বেজিং। দুই পরাশক্তির মধ্যকার বাণিজ্য যুদ্ধের আগুনে নিত্য নতুন ঘি ঢালছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একদিকে দিচ্ছেন সমাধানের আশ্বাস, অন্যদিকে নতুন করে শুল্কারোপের তালিকায় যোগ করছেন নিত্য নতুন চীনা পণ্য। সবশেষ, আগস্টের মাঝামাঝিতে তার ঘোষণা, নতুন করে ৫৫ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে বসবে আরও ৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক। প্রতিবাদে মার্কিন পণ্যে বাড়তি শুল্কারোপের হুমকি দেয় চীন। শুরু হয় ৫ হাজার পণ্যের তালিকা তৈরির কাজ। বিশ্লেষকদের মতে, দুই পক্ষের এ দ্বন্দ্বে যতটুকু ক্ষতি বেজিংয়ের, তার চেয়ে বহুগুণে ওয়াশিংটনের। ইনস্টিটিউট অব আমেরিকা এ্যান্ড ওশান স্টাডি পরিচালক লি উয়ি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন ও অটোমোবাইল শিল্প পণ্যের বড় ক্রেতা চীন। কিন্তু বাড়তি শুল্কারোপের কারণে এসব পণ্যের আমদানি কমিয়েছে বেজিং। ইউনিভার্সিটি অব ইন্টারন্যশনাল বিজনেস এ্যান্ড ইকোনমিকসের ইনস্টিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমি-এর পরিচালক স্যাং বাই ছুন বলছেন, ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কারোপের জবাবে মার্কিন কৃষিপণ্য থেকে বাড়তি শুল্ক আদায় করছে বেজিং। কমিয়েছে আমদানিও। এতে ঝুঁকিতে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি খাত। একই সঙ্গে পুঁজিবাজার, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারেও হুমকির মুখে পড়ছে। বেজিং বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বে সম্ভাব্য হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুত জিনপিং প্রশাসন। অর্থনৈতিক ধস ঠেকাতেও নেয়া হচ্ছে নানামুখী উদ্যোগ। মিনিস্ট্রি অব কমার্সের চাইনিজ একাডেমি অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন মডার্ন সাপ্লাই চেন ইনস্টিটিউট পরিচালক লিন মেং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্কারোপের কারণে পণ্য সরবরাহ পদ্ধতিতে যে হুমকি দেখা দিয়েছে, তা মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে বিকল্প উৎসের সন্ধান করছে বেজিং। একই সঙ্গে চীনা পণ্য রফতানিতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে চুক্তিও করা হচ্ছে। এদিকে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ১ শতাংশ, প্রথম প্রান্তিকেও যা ছিল ৩ দশমিক ১ শতাংশ। ফলে দেশটিতে নতুন কাজের সুযোগ তৈরির হারও কমেছে আশঙ্কাজনক হারে।
×