ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলায় রবীন্দ্রনাথের নাটক ‘চিত্রা’ ও ‘রথযাত্রা’ আজ

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ২৮ জুলাই ২০১৯

শিল্পকলায় রবীন্দ্রনাথের নাটক ‘চিত্রা’ ও ‘রথযাত্রা’ আজ

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ ‘চীনা সাংস্কৃতিক মাস-২০১৯’ উপলক্ষে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আজ রবিবার বিকেল ৪টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটির পরিবেশনায় রবীন্দ্রনাথের নাটক ‘চিত্রা’ এবং বাংলাদেশের লোক নাট্যদলের পরিবেশনায় রবীন্দ্রনাথের নাটক ‘রথযাত্রা’ মঞ্চস্থ হবে। চায়নার পিকিং ইউনিভার্সিটির পরিবেশনায় ‘চিত্রা’ নাটকটি নির্দশনা দিয়েছেন হৌ ইং চুয়ে, অনুবাদ করেছেন পাই থাই ইউয়ান। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন লু চিয়া হুয়া, চিয়াং চাও লে, লাই হাই ফোং, লি লিন খুন ও লিউ চিং ই।‘চিত্রা’ নাটকের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথের নাট্যকর্ম এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে চীনা ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে চীনের সংস্কৃতির বিশেষ সংস্পর্শের সুযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। পাশাপাশি, ছাত্রছাত্রীদের চীন এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিকাশ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করতে উৎসাহিত করার চেষ্টাও আছে। রবীন্দ্রনাথের নাটকের নারী চরিত্রগুলো নেয়া হয়েছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী ও স্তর থেকে। ‘চিত্রা’ নাটকের ‘চিত্রাঙ্গদা’ তেমনি একটি চরিত্র। ১৮৯২ সালে রবীন্দ্রনাথ তার ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটক প্রকাশ করেন। এই নাটকের বিষয়বস্তু মহাকাব্য মহাভারত থেকে নেয়া হয়েছে। নাটকে বীর অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদার প্রেমের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। তবে মহাভারতের চিত্রাঙ্গদাও কবির নাটকের চিত্রাঙ্গদার মধ্যে অমিল আছে। মহাভারতের ‘চিত্রাঙ্গদা’ ছিলেন একজন অপরূপ ও লাবণ্যময়ী মেয়ে। আর রবীন্দ্রনাথের নাটকে চিত্রাঙ্গদার নেই ফুলের মতো সুন্দর মুখ আর অপূর্ব চেহারা। তিনি মেয়েদের লাবণ্য বোঝেন না, ভয় কি, তাও তিনি জানেন না। তিনি সুন্দর সুন্দর পোশাক ও গায় দেন না। সারাদিন তিনি শুধু তীর-ধনুক নিয়ে থাকেন। মহাভারতের চিত্রাঙ্গদার সঙ্গে এ চিত্রাঙ্গদার অনেক পার্থক্য। নাটকে চিত্রাঙ্গদা যখন প্রথম অর্জুনের সামনে আসেন, তখন তিনি অর্জুনের মন জয় করতে পারেননি। তবে চিত্রাঙ্গদা শেষ পর্যন্ত অর্জুনের ভালবাসা পেয়েছেন। ‘চিত্রা’ নাটকে কবি এই কাহিনী অপূর্ব ভাষায় ফুটিয়ে তোলেন। লোক নাট্যদলের পরিবেশনায় ‘রথযাত্রা’ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন ঋত্বিক নাট্যপ্রাণ লিয়াকত আলী লাকী। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন শাহারিয়ার কামাল, আবু বকর বকশী, জিয়াউদ্দিন শিপন, বিপুল কুমার দাস, ধনপতি, মাসউদ সুমন, জুলফিকার আলী (বাবু), আজিজুর রহমান সুজন, শিশির কুমার রায়, মুসা রুরেল, মোঃ ফজলুল হক এবং মোঃ তাজুল ইসলাম, রুমা, মুমু, নিশি, বিথী, মুন্নি, সনিয়া, ইতিহাস, ফজলু, মুসা রুবেল. জাহাঙ্গীর রানা ও মিজান। এছাড়াও মঞ্চ ব্যবস্থাপনায়- জুলফিকার আলী বাবু, মঞ্চ সহকারী মোঃ ফজলুল হক, মোঃ তাজুল ইসলাম এবং সঙ্গীতে- ইয়াসমিন আলী, সোহান, সুচিত্রা, অনন্য, মেহেক। ‘রথযাত্রা’ নাটকে রথের গল্প বলা হয়েছে। রাজা, পুরোহিত ও সৈন্য কেউ রথ চালাতে পারছেন না। গভীর সঙ্কট! জনগণ উদ্বিগ্ন, কেউ কোন উপায় বের করতে পারছে না। অবশেষে মন্ত্রী মহোদয় সমাজের বণিক শ্রেণীকে আমন্ত্রণ জানান রথ চালাতে। অনিচ্ছা নিয়ে তারা অনেক চেষ্টা করল, কিন্তু রথের চাকা চলল না। বণিক শ্রেণীর ব্যর্থতায় সৈন্যরা খুশি হলো। হঠাৎ একজন সংবাদ নিয়ে এলো, সমাজের নিম্নবর্ণের অদক্ষ লোকজন রথ চালানোর জন্য আসছে। এ সংবাদে সৈন্যরা এবং পুরোহিতরা স্তম্ভিত হলেন এবং তাদের নিবৃত্ত করতে চাইলেন। যেহেতু এরা সমাজের নিম্ন শ্রেণীর, তাই তাদের কোন অধিকার নেই রথের রশি স্পর্শ করার! কিন্তু মন্ত্রী মহোদয় এদের বাধা দিতে নিষেধ করলেন। অবশেষে নিম্নবর্ণের জনগণের নেতা তার দল নিয়ে এলো। তারা রথের রশি ধরতেই রথের চাকা সাবলীলভাবে চলতে শুরু করল! প্রসঙ্গত, ঢাকায় চীনা দূতাবাসের আয়োজনে ‘চীনা সংস্কৃতি মাস-২০১৯’ উপলক্ষে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে বেজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যদল ২৬ থেকে বাংলাদেশ সফর করছে। নাট্য দলটি গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থিয়েটারে রবীন্দ্রনাথের নাটক ‘চিত্রা’ মঞ্চস্থ করে।
×