ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেক্সিট নিয়ে ভোট স্থগিতের পর কূটনৈতিক উদ্যোগ টেরেসা মের

ইইউর সঙ্গে আলোচনা

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

ইইউর সঙ্গে আলোচনা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি স্থগিত হওয়ার পর এ বিষয়ে প্ল্যান বি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন বলে জানা গেছে। পার্লামেন্টে ভোটে গেলে তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনা বিপুল ভোটে প্রত্যাখ্যাত হতো এটি অনুমান করেই ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। মে এখন ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইউরোপের নেতারা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের যে ব্রেক্সিট সমঝোতা হয়েছে তাতে পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই। এএফপি ও গার্ডিয়ান। মে সোমবার ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টের ভোট স্থগিত করেন। তিনি গত সপ্তাহে কমন্স সভায় প্রস্তাবটি উপস্থাপন করলে কেবিনেটের পূর্ণাঙ্গ আইনী সুপারিশ নেই এমন কারণ দেখিয়ে সেটি ফিরিয়ে দেন এমপিরা। ঠিক হয় পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ উপস্থাপনের পর সোমবার এর ওপর ভোটাভুটি হবে। ভোট হলে ব্রেক্সিট চুক্তিটি পাস না হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকায় মে শেষ পর্যন্ত ভোট পিছিয়ে দেন। মে এখন ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নতুন করে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করতে চান। ব্রেক্সিট চুক্তি রক্ষার উদ্দেশে ইউরোপীয় নেতাদের পাশাপাশি তিনি ইইউর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন। মঙ্গলবার প্রথমে জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মেরকেল এবং পরে ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে তিনি আলোচনা করেন। ব্রেক্সিট নিয়ে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের আলোচনায় একটি জটিল বিষয় হলো উত্তর আয়ারল্যান্ডের সীমানা। মে মেরকেলকে এটি নিশ্চিত করতে চাইছেন যে ব্রেক্সিট হলেও আয়ারল্যন্ডের সঙ্গে হার্ড বর্ডার হবে না। কমন্স সভার সমর্থন পেতে উত্তর আয়ারল্যান্ড সীমান্ত পরিকল্পনার ব্যাপারে মে’কে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের সম্মতি প্রয়োজন। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন, ইইউ এ ইস্যুতে নতুন করে কোন আলোচনা বা তর্কবিতর্কে যাবে না। তবে নেতারা নিশ্চয়ই যুক্তরাজ্যকে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সহজ করতে কীভাবে সাহায্য করা যায় তা নিয়ে আলোচনায় বসবেন। কমন্সসভায় নতুন ভোটাভুটি কবে হবে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর কিছু জানায়নি। তবে এর জন্য ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা আছে বলে জানা গেছে। ২৫ নবেম্বর ব্রাসেলসে ইইউ নেতৃবৃন্দ যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা অনুমোদন করেন। কমন্স সভার এমপিদেরকে ওই পরিকল্পনা অনুমোদন করতে বলা হয়েছিল। মে এর আগেও তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে কয়েকবার বাধার মুখে পড়েছেন। ব্রেক্সিট বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার যে নতুন নীলনক্সা তিনি তৈরি করেছেন তার প্রতি দল ও ব্যবসায়ীদের সমর্থন আদায় করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। অনেক পার্লামেন্ট সদস্য খোলাখুলিভাবে চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন চুক্তির সমালোচনা করে বলেছেন এটি ব্রিটেনকে ইইউয়ের ‘অধীন রাজ্যে’ পরিণত করবে। ইইউ ছাড়ার পর ইউকে-ইইউ সম্পর্ক বিশেষ করে বাণিজ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টি কি রকম হবে সেটি নির্ধারণ করাই এ চুক্তির উদ্দেশ্য। ইইউ চুক্তিটি অনুমোদন করলে মে তখন নিজ দেশের এমপি ও নিজের দলকে বোঝানোর উদ্যোগ নিতে হবে। ইউরোপীয় কমিশন ও পার্লামেন্টকেও চুক্তিটি অনুমোদন করতে হবে। বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনসহ দলের ৫০ জনের বেশি এমপি জানিয়ে রেখেছেন তারা পরিকল্পনার বিপক্ষে ভোট দেবেন। তবে তারা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে মে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে কি নিশ্চয়তা নিয়ে আসেন সেটি দেখে তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
×