ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জামালপুর-১ আসনে মনোনয়নের চিঠি পেলেন দু’জন

প্রকাশিত: ০২:৪৭, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

জামালপুর-১ আসনে মনোনয়নের চিঠি পেলেন দু’জন

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনে নূর মোহাম্মদ ও বর্তমান এমপি আবুল কালাম আজাদকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দু’জনই দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত দলীয় মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন। দু’জনকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হলেও দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ আসনের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ একাট্টা নূর মোহাম্মদের পক্ষে। নূর মোহাম্মদকে দলীয় প্রতীক নৌকা দেওয়ার দাবিতে দুটি উপজেলায় রবিবার বিভিন্ন স্তরে মিছিল করেছে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা। নূর মোহাম্মদ মনোনয়ন পাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণও করেছেন তারা। দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ এই দুই উপজেলার আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ তৃণমূলের বিভিন্ন নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই আসনে আবুল কালাম আজাদের গ্রহণযোগ্যতা এখন শূন্যের কোঠায়। নানা কারণে আবুল কালাম আজাদ দল ও কর্মী বিচ্ছিন্ন। তার অসদাচারণের কারণে সাধারণ মানুষও তার প্রতি ক্ষুব্ধ। এছাড়া বিএনপিরও রয়েছে শক্তিশালী প্রার্থী। আবুল কালাম আজাদ দু’বার এমপি এবং একবার মন্ত্রী থাকার পরও নেতাকর্মী ও ভোটারদের কাছে টানতে পারেননি। উল্টো দূরত্ব বেড়েছে সবার সাথে। আবুল কালাম আজাদ এমপি থাকাকালীন সময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক ডা: খন্দকার শাহজালাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মোকারেছ খোকন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মেজবা উদ্দিন জুলফিকার, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জুম্মান তালুকদার, কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ রেজাসহ অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বিভিন্ন মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ অবস্থায় আত্মীয়তা বা লবিংয়ের কারণে আবুল কালাম আজাদকে শেষ পর্যন্ত নৌকা দেওয়া হলে দলের ভরাডুবি ঠেকানো কঠিন হবে। অন্যদিকে নূর মোহাম্মদ এলাকার নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তিনি দক্ষ সংগঠক। তার নেতৃত্বে বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জের আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনগুলো ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে গ্রাম পর্যায়ে অত্যন্ত শক্তিশালী। প্রতিটি এলাকার ভোটারদের সাথে রয়েছে তার গভীর সম্পর্ক। নূর মোহাম্মদ নৌকা পেলে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ ভোটাররা তার পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমে আসবে। তিনি সত্তরভাগ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হবেন এমন আশা করছেন তারা। দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, নূর মোহাম্মদ মনোনয়ন পাওয়ায় শতভাগ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তারা। কারণ নূর মোহাম্মদরে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সাথে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। নূর মোহাম্মদের জনপ্রিয়তার কারণ হিসেবে তারা বলছেন, তিনি নেতাকর্মীর সুখে-দু:খে তাদের পাশে থাকেন। পাশাপশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজস্ব তহবিলে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য কাজ করছেন। তৃণমূল পর্যায়ে ঘরে ঘরে তিনি গাছ লাগিয়েছেন, শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র দিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বীজ দিয়েছেন, নিজস্ব অর্থে তিনি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে যাচ্ছেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার কোন মানুষ বড় কোন ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা এবং অপারেশনের দায়িত্ব নেন তিনি। সমস্যায় পড়ে নূর মোহাম্মদের কাছে গেলে কখনোই তিনি কাউকে ফেরান না। এই অবস্থায় নূর মোহাম্মদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ায় উৎফুল্ল সাধারণ মানুষ। দুজন দলীয় মনোনয়নের চিঠি পেলেও নূর মোহাম্মদের পক্ষে সবাই একাট্টা হয়ে মাঠে থাকবেন এমনটাই বলছেন তারা। তার বিজয় ঠেকানোর সাধ্য কারো হবে না। অন্যদিকে লবিং বা কেন্দ্রীয় কারো আতœীয় বিবেচনায় যদি আবুল কালাম আজাদকে নৌকা দেওয়া হয় তাহলে দলীয় নেতাকর্মীদেরই নির্বাচনের মাঠে নামানো কঠিন হবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও ভোটাররা বলছেন সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেও আবুল কালাম আজাদের পরাজয় ঠেকানো কঠিন হবে। এই অবস্থায় এলাকায় গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয়তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত নূর মোহাম্মদকে নৌকা দিবেন এমনটাই আশা করছেন তারা।
×