ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফুলপ্রেমী হারুনের কথা

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

 ফুলপ্রেমী হারুনের কথা

এক ফুল প্রেমিক যুবক। সর্বত্র সৌন্দর্য দেখতে চাচ্ছে বলে এই যুবক ফুলের চারা রোপণ করে বেড়াচ্ছে এক উপজেলা থেকে অপর উপজেলা। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রাম। এই যুবকের নাম হারুনর রশীদ। প্রকৃতি প্রেমিক যুবক সর্বত্র সৌন্দর্যের চিত্র দেখতে চায় বলে ফুলের গাছের প্রতি এত টান। সরকার বিভিন্নভাবে সামাজিক ভারসাম্য রক্ষার্থে কাজ করে যাচ্ছে। যুবক হারুন এরই ধারাবাহিকতায় নিজেকে উৎসর্গ করে সামাজিক বিপর্যয় ঠেকাতে সৌন্দর্যকে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। হারুন যুবক হলেও লেখা পড়াতেও পিছিয়ে নেই। এ বছর কানসাট সোলেমান ডিগ্রী কলেজ থেকে ফাইনাল পরীক্ষা দেবে। ছোট থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, দর্শনীয় স্থান, লোক সমাগম হয়ে থাকে এমন স্থান বেছে নিয়ে ফুল গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। তার জন্মস্থান থেকে শুরু করে জেলা ও জেলার বাইরে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে ফুলের চারা রোপণ করার ইচ্ছা। বর্তমানে তিনি দুটো উপজেলা বেছে নিয়েছেন। শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুর। তিনি এইসব স্থানের বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সামনে ও পেছনে বিভিন্ন প্রজাতীয় সহস্রাধিক ফুলের চারা রোপণ করে অপেক্ষা করছেন ফুল ফোটার। এর মধ্যে রয়েছে বকুল, পলাশ, চেরি, কাঞ্চন, জামরুল, সেনালু। শিবগঞ্জ উপজেলার ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পৌর শহরের সোনামসজিদ দারুসবাড়ি মসজিদ, ধনায় দীঘি মসজিদসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ফুলের চারা রোপণ অব্যাহত রেখেছেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার ঝিলিম, নাচোলের খোলসী ও গোমস্তাপুরের রহনপুরের পিএম, আইডিয়াল কলেজে ফুলের চারা রোপণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ফুলের চারা রোপণ এখনও অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমানে তার বাড়ির ছাদে প্রচুর পরিমাণে চারা সংরক্ষণ করেছেন। তিনি জানান ৩০/৩৫ প্রজাতির ফুলের চারা তার স্টকে রয়েছে। তিনি সুবিধামতো সময়ে জেলার প্রতিটি উপজেলার স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও দর্শনীয় স্থানে চারা রোপণ করবেন। তিনি দর্শনীয় স্থানগুলোকে সুসজ্জিত করতে চারাগুলো রোপণ করবেন। স্থানীয় জনসাধারণ জানিয়েছেন হারুন ছোটবেলা থেকেই ফুলকে ভালবাসত। ফুলকে ভালবাসতে গিয়ে সে ফুল প্রেমী হয়ে উঠেছে। তার মন যখন যেখানে চাই ফুলের চারা নিয়ে খুনতি হাতে রোপণ করে আসে। ছোট থেকে ফুলকে ভালবেসে বিছানায় রেখে সঙ্গ দিয়ে নিয়ে থাকতাম। পিতৃহারা যুবক হারুন বলেন যেখানে ফুলের গাছ তেখতাম সঙ্গে সঙ্গে পরিচর্যা করতাম। এই নিয়ে বন্ধুবান্ধব ও পাড়া পড়শীরা নানান মন্তব্য করলেও বাড়ির মানুষেরা সহযোগিতা দিয়েছে। একটা চিন্তা হারুনকে তাড়া করে বেড়াত এবং এখনও বেড়াচ্ছে কিভাবে সবুজ বনায়নের সোন্দর্য আরও বৃদ্ধি করা যায়। তার ইচ্ছে শুধু এই জেলা নয় সমগ্র দেশটাকে ফুলের চারাতে ঢেকে দেয়া। বাবা ২০১৪ সালে মারা যাবার পর পরিবারের পুরো দায়িত্ব তার কাঁধে। তাই বেঁচে থাকার তাগিদে ব্যবসা বাণিজ্য করা। এই অর্থ দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাসহ দেশকে একটি গ্রীনসিটি শোভাবর্ধিত সোন্দর্য ফুটিয়ে তোলার স্বপ্ন দেখছে হারুন। তিনি বিভিন্ন নার্সারি থেকে ফুলের চারা সংগ্রহ করে থাকেন। এসব ফুল উন্নত প্রজাতির। তার ইচ্ছে আছে যে কেউ তাকে ডাক দিলে সেখানে গিয়ে সে ফুলের চারা রোপণ করে আসবে। সাধ্যের মধ্যে হলে পরিচর্যায় কোন আপত্তি নেই। হারুনের মতো ছেলেরা ফুল প্রেমিক হবার কারণে আজ সমগ্র দেশ ফুলে ফলে ভরে উঠুক এই প্রত্যাশা সবার। -ডি. এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে
×