জিএম মোস্তফা ॥ অবশেষে বুট জোড়া তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন দিদিয়ের দ্রগবা। বুধবার সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম টুইটারে আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানিয়েছেন আইভরিকোস্টের সাবেক এই তারকা ফুটবলার। সেই সঙ্গে ‘বিস্ময়কর ২০ বছরের’ বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানলেন সাবেক চেলসির এই তারকা ফুটবলার।
গত মার্চেই ৪০ বছরে পা রাখা দিদিয়ের দ্রগবা শেষ খেলেছেন ফোনেক্সের হয়ে। ৮ নবেম্বর লুসভিল সিটির কাছে তার দল ১-০ গোলে হার মানে। তবে ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়ই পার করেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব চেলসিতে। ব্লুজদের হয়ে ৩৮১টি ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। এই সময়ে প্রতিপক্ষের জালে ১৬৪ বার বল জড়িয়েছেন দ্রগবা। ৪টি প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে রয়েছে ৪টি এফএ কাপ এবং ২০১২ সালের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ট্রফিও।
ক্লাবের হয়ে সাফল্যের পাশাপাশি দেশের হয়েও সাফল্য এনেছেন দিদিয়ের দ্রগবা। তিনিই আইভরি কোস্টের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ৬৫টি গোল রয়েছে তার দেশের হয়ে। ক্যারিয়ারের শেষ ১৮ মাস তিনি কাটিয়েছেন আমেরিকার দল ফোনেক্স রাইজিংয়ের হয়ে। সেই ক্লাবের অর্ধেক মালিকানাও তার দখলে। টুইটবার্তায় দ্রগবা লিখেছেন, ‘আমি সকল ফুটবলার, কোচ, দল এবং ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা আমার এই দীর্ঘ পথচলায় পাশে ছিলেন।’ এই প্রজন্মের প্রতি উপদেশ হিসেবে দ্রগবা লিখেন, ‘যদি কেউ তোমাকে বলে, তোমার স্বপ্ন অনেক বড়, তাহলে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের কাজের প্রতি মন দাও। প্রচুর পরিশ্রম করে সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত কর।’
আফ্রিকান হয়েও ইউরোপ মাতানো দিদিয়ের দ্রগবা ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত তেমনভাবে পেশাদার ফুটবল খেলেননি। ফরাসী ক্লাব গুইনগ্যাম্প তাকে ২০০২ সালে দলে নেয়। ১৮ মাস পর লীগের অন্যতম সেরা ক্লাব মার্সেইতে নতুন করে ঠিকানা গড়েন তিনি। তার পরের বছরই ২৪ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে তাকে কিনে নেয় চেলসি। সেই যে শুরু, এরপর আর পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০০৬-০৭ এবং ২০০৯-১০ মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে সোনার বুট জেতেন দিদিয়ের দ্রগবা। সেখানে মোট ১০৪টি গোল রয়েছে তার।
দ্রগবা ক্লাব ফুটবলে খেলেছেন ৬টি দেশের হয়ে। তার সাফল্যের বেশিরভাগটাই এসেছে ফ্রান্স আর ইংল্যান্ড থেকে। চেলসিতে ফেরার আগে ৬ মাস কাটিয়েছেন সাংহাই শেনহুয়ার জার্সিতে। এছাড়া দেড় বছর তুরস্কের ক্লাব গালাতাসের হয়েও খেলেছেন তিনি। ২০১৪-১৫ মৌসুমে চেলসির চতুর্থ প্রিমিয়ার লীগ ও তৃতীয় লীগ কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে দ্রগবার পা থেকে এসেছিল সাতটি গোল। চেলসি ছেড়েছিলেন ক্লাবের চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে। ২০১৫ সালে চেলসি ছেড়ে মেজর লীগ সকারের দল মন্ট্রিয়েল ইমপেক্টে যোগ দেন দ্রগবা। এরপর গত বছর যোগ দেন ফোনেক্স রাইজিংয়ে। এই ক্লাবের খেলোয়াড়ের পাশাপাশি মালিকও বনে যান আইভরি কোস্টের হয়ে তিনি।
১৯৯৮ সালে ফুটবলে ক্যারিয়ার শুরু করা দ্রগবা দুইবার জেতেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সেরা গোল্ডেন বুট পুরস্কারের খেতাব। এছাড়া দুইবার আফ্রিকার সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন এই আইভরিয়ান স্ট্রাইকার।