ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যান্ডি টেস্টে ৫৭ রানের জয় সফরকারীদের, ২০০১ সালের পর শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজ জিতল (২-০) ইংল্যান্ড, দারুণ সেঞ্চুরিতে ম্যাচসেরা অধিনায়ক জো রুট, ৪০ উইকেটের ৩৮টিই নিয়েছেন দু’দলের স্পিনাররা- যা নতুন রেকর্ড, কলম্বোয় শুক্রবার শুরু আনুষ্ঠানিকতার তৃতীয় ও শেষ টেস্

ইংলিশদের দেড় যুগের অপেক্ষার অবসান

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ১৯ নভেম্বর ২০১৮

  ইংলিশদের দেড় যুগের অপেক্ষার অবসান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ না, ক্যান্ডি টেস্টটা শেষ পর্যন্ত আর খুব বেশি রোমাঞ্চ ছড়াতে পারেনি। সেটি যেমন লঙ্কান টেল-এন্ডারদের দৃঢ়তার অভাবে, তেমনি প্রতিপক্ষের দাপুটে বোলিংয়ের কারণে। রবিবার পঞ্চমদিন সকালে আর ১৭ রান যোগ করে ২৪৩-এ গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৫৭ রানের দারুণ জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ (২-০) নিশ্চিত করে সফরকারী ইংলিশরা। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৩৩৬। ইংল্যান্ড ২৯০ ও ৩৪৬। ২০০১ সালের পর দীর্ঘ ১৭ বছরে শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতল ইংল্যান্ড। ম্যাচে দু’দলের মোট ৪০ উইকেটের ৩৪টিই নিয়েছেন স্পিনাররা। টেস্ট ক্রিকেটে যা নতুন রেকর্ড। তবে দারুণ ব্যাটিংয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিজের করে নিয়েছেন অধিনায়ক জো রুট। কলম্বোয় শুক্রবার শুরু আনুষ্ঠানিকতার তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। ৩০১ রানের জয়ের লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ছিল আর ৭৫ রান, ইংল্যান্ডের ৩ উইকেট। শেষদিন রোমাঞ্চ ছড়ানো তো দূরের কথা খুব একটা লড়াইও করতে পারেনি স্বাগতিকরা। সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে শ্রীলঙ্কার আশা হয়ে টিকে ছিলেন নিরোশান দিকওয়েলা। এই কিপার ব্যাটসম্যানকেই ফিরিয়ে পঞ্চম ও শেষদিন শুরু করে ইংল্যান্ড। অফস্পিনার মঈন আলিকে ড্রাইভ শট খেলতে গিয়ে স্লিপে বেন স্টোকসের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় তার ৩৫ রানের ইনিংস। এক বল পর অধিনায়ক সুরঙ্গা লাকমলকে বোল্ড করে দলকে জয়ের আরও কাছে নিয়ে যান মঈন। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে মালিন্দ পুষ্পকুমারাকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নেন বাঁহাতি ইংলিশ স্পিনার জ্যাক লিচ। মাত্র ১৭ রান যোগ করে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংস। ম্যাচজুড়ে স্পিনাররা কতটা দাপট দেখিয়েছে পরিসংখ্যানই তার প্রমাণ। ৪০ উইকেটের ৩৮টি নিয়েছেন দু’দলের স্পিনাররা যা টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ, নতুন বিশ্বরেকর্ড। ১৯৬৯ সালে নাগপুরে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্টে স্পিনারদের ৩৭ উইকেট ছিল আগের সেরা। টেস্টে পঞ্চমবারের মতো ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়েছেন ইংলিশ স্পিনাররা। বিপরীতে ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটের দীর্ঘ ইতিহাসে মাত্র ১১তম বার উইকেটশূন্য থাকেন পেসাররা। স্পিনার লিচ ৫ উইকেট নেন ৮৩ রানে। আর মঈন ৭২ রানে নেন ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলা ১২৬ রানের ইনিংস রুটকে এনে দিয়েছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। দীর্ঘ দেড় যুগে আগের গ্রেট সব অধিনায়ক যা পারেনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সেটিই করে দেখালেন তুখোড় এই ব্যাটসমান। ‘উপমহাদেশে টেস্ট সিরিজ জয় সবসময়ই বিশেষ কিছু। ছেলেদের খেলায় আমি দারুণ খুশি। স্পিনে মঈন-লিচের কথা আলাদাভাবে বলতে হয়’- অনুভূতি রুটের। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ॥ ২৯০/১০ (৭৫.৪ ওভার; বার্নস ৪৩, জেনিংস ১, স্টোকস ১৯, রুট ১৪, বাটলার ৬৩, মঈন ১০, ফোকস ১৯, কুরান ৬৪, রশিদ ৩১, লিচ ৭, এ্যান্ডারসন ৭*; লাকমল ১/৪৪, দিলরুয়ান ৪/৬১, পুষ্পকুমারা ৩/৮৯, ধনঞ্জয়া ০/৪, দনঞ্জয়া ২/৮০) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ৩৪৬/১০ (৮০.৪ ওভার; লিচ ১, বার্নস ৫৯, জেনিংস ২৬, রুট ১২৪, স্টোকস ০, বাটলার ৩৪, মঈন ১০, ফোকস ৬৫*, কুরান ০, রশিদ ২, এ্যান্ডারসন ১২; দিলরুয়ান ৩/৯৬, পুষ্পকুমারা ১/১০১, দনঞ্জয়া ৬/১১৫)। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস ॥ ৩৩৬/১০ (১০৩ ওভার; করুনারতেœ ৬৩, পুষ্পকুমারা ৪, ধনঞ্জয়া ৫৯, কুসল মেন্ডিস ১, ম্যাথুস ২০, রোশেন ৮৫, দিকওয়েলা ২৬, দিলরুয়ান ১৫, দনঞ্জয়া ৩১, লাকমল ১৫*; লিচ ৩/৭০, মঈন ২/৮৫, রশিদ ৩/৭৬, রুট ১/২৬, স্টোকস ০/৯) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ২৪৩/১০ (৭৪ ওভার; করুনারতেœ ৫৭, কৌশল সিলভা ৪, ধনঞ্জয়া সিলভা ১, কুশল মেন্ডিস ১, ম্যাথুস ৮৮, রোশেন ৩৭, ডিকভেলা ৩৫, দনঞ্জয়া ৮*, লাকমল ০, পুষ্পকুমারা ১; এ্যান্ডারসন ০/১২, লিচ ৫/৮৩, মঈন ৪/৭২, রশিদ ১/৫২, রুট ০/১৫)। ফল ॥ ইংল্যান্ড ৫৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ জো রুট (ইংল্যান্ড)। সিরিজ ॥ তিন টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ড ২-০তে এগিয়ে।
×