ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাংবাদিকদের বললেন ডিএমপি কমিশনার

কোন পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১ অক্টোবর ২০১৮

 কোন পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানিয়েছেন, পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির কোন অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। রবিবার রাজধানীর কাওরান বাজার সিগন্যালে মাসব্যাপী ট্রাফিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। পুলিশ সদস্যদের চাঁদা আদায়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ব্যক্তিগতভাবে যদি কেউ (পুলিশ সদস্য) অনিয়ম করে। তাহলে সেই দায় একান্তই তার। কোন ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না। যদি কারও বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, দুই মাসব্যাপী ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে আমরা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে যেতে পারিনি। তবে ধারাবাহিক এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। সবারই আইন মানতে হবে। আইন না মানলে তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা হবে। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, শত বছরের অভ্যাস দুই-এক মাসেই পরিবর্তন হয়ে যাবে- আমরা সেটা প্রত্যাশাও করি না। তবে সব প্রক্রিয়ায় ২০১৮ সালের মধ্যেই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে। পুলিশ কমিশনার জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঈদের আগে ১০ দিনব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করা হয়। ঈদের পর সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে ট্রাফিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলে। পুলিশের এ কার্যক্রমে স্কাউট, গার্লসগাইড, বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়তা করে। এ ছাড়া বিআরটিএ, সিটি কর্পোরেশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করছি। গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে কতটা অগ্রগতি হয়েছে। সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু আন্তরিকতা বা প্রচেষ্টার ঘাটতি ছিল না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ডিএমপি কমিশনার জানান, নির্ধারিত বাস স্টপেজে আমরা শুরু থেকে শেষ সাইনবোর্ড লাগিয়েছি। মোটরসাইকেলে দুই আরোহীর হেলমেট নিশ্চিত করা কিংবা দুইজনের অধিক আরোহী বহন না করার বিষয়ে আমরা অনেকটাই সফল। পথচারীদের ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারেও সফলতা এসেছে কিন্তু কাক্সিক্ষত মাত্রায় আসেনি। দুই মাসব্যাপী অভিযানে ডিএমপি প্রায় ৭ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করেছে। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, এ সময়ে পর্যাপ্ত গাড়ি ডাম্পিং ও রেকারিং করা হয়েছে। আমাদের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতাই সবচেয়ে বড় সমস্যা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পথচারীদের জোর করে ফুটওভার ব্রিজে ওঠাতে হয়। ইতোমধ্যে আমরা চালকদের সঙ্গেও বহু মিটিং করেছি। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ব্যাপক নয়। আমরা প্রত্যাশা করব, সমাজের সব দায়িত্বশীলরা আইন মানবেন। সবাই আইন মানার সংস্কৃতি চালু করুন। নিজে আইন মানুন ও অন্যকে আইন মানতে উদ্বুদ্ধ করুন। আমরা বিদেশে গেলে কিংবা ঢাকার বিশেষ কোন এলাকায় গেলে আইন মানি কিন্তু সব স্থানে কেন আইন মানি না। কেন- এমন প্রশ্ন রেখে পুলিশ কমিশনার বলেন, শুধু পুলিশ নয়। সরকারের কোন বাহিনী দিয়ে এককভাবে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়। যতক্ষণ না আমাদের মধ্যে আইন মানার প্রবণতা তৈরি হবে। জাহাঙ্গীর গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত আমরা স্বয়ংক্রিয় বাতির আওতায় আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাতিগুলো চালু করা সম্ভব হয়নি। কারণ বাতিগুলো সরকারের অন্য সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। আছাদুজ্জামান মিয়া আরও জানান, আমরা সব সংস্থার সঙ্গেই সমন্বয় করছি। তিনি বলেন, ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে তাদের কর্মসংস্থানের বিষয় রয়েছে, লেগুনা কোন পথে চলবে বা কোন পথে চলবে না আমরা সেসব ভাবছি। সাফল্যের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুশৃঙ্খল নগরী গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ডিএমপি কমিশনার।
×