ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাড্ডায় যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ২৪ এপ্রিল ২০১৮

বাড্ডায় যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সন্ত্রাসী হামলায় বাড্ডায় এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি। পুলিশ সোমবার ঘটনাস্থলের আশপাশে ব্যাপক অভিযান চালিয়েও কাউকে আটক করতে পারেনি। এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, রবিবারের সহিংস ঘটনায় এখনও গোটা এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। পাল্টা আক্রমণ হতে পারে এমন আশঙ্কায় অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে। এদিকে সোমবার বাদ মাগরিব নিহত কামরুজ্জামান দুখুকে বেরাইদে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এলাকাবাসী জানিয়ে, কামরুজ্জামান দুখুকে হত্যার আগে সন্ত্রাসীরা এলাকায় মহড়া দেয়। তাদেরকে রবিবার দুপুুরে এলাকায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়। হঠাৎ বিকেলে উভয়পক্ষের তর্কাতর্র্কির একপর্যায়ে গুলি চালানো হয় দুখুর ওপর। এ নিয়ে দুপক্ষই দাবি করছে-এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়েই এই হত্যাকা-। যদিও পুলিশ বলছে, প্রকৃতপক্ষে স্থানীয় বালু ও ইট সিমেন্টের ব্যবসা ছাড়াও সংসদ একেএম রহমত উল্লাহর ভাগ্নে ফারুকের সঙ্গে নিহতের পারিবারিক বিরোধ ছিল দীর্ঘদিনের। এর আগেও একাধিকবার এ নিয়ে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাত হয়েছে। সর্বশেষ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলে উচ্চ আদালতে মামলা করে তা স্থগিত করে দেয়ার পর থেকেই এ বিরোধ মারাত্মক আকার ধারণ করে। তখন থেকেই স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম রহমত উল্লাহর ভাগ্নে ফারুকের সঙ্গে নিহতের পরিবারের শত্রুতা প্রকাশ্যে রূপ নেয়। তারই জের ধরে রবিবার দুখু স্থানীয় একটি সিমেন্ট কারখানার সামনের ইটাবালুর বিল জমা দিতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন। এদিকে নিহতের বড় ভাই বেরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভাগ্নে ফারুকের বিশাল বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই এমপির মদদে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তার অত্যাচার জুলম নির্যাতন, চাদাবাজি ও ধারাবাহিক সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে দুখু। এ হত্যাকা-ের সুষ্ঠু তদন্ত করে খুনীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দিনভর এলাকায় পরিস্থিতি থমথমে থাকায় অনেক নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি এ হত্যাকা-ে জড়িতদের ধরতে হানা দেয়া হয়। রাতে নিহতের পরিবার থানায় বসে মামলা দায়েরের প্রস্তুুতি নিচ্ছিল। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ আলী জানিয়েছেন, যে কোন সময় মামলা দায়ের করা হবে, তদন্ত চলছে। পুলিশের বাড্ডা-ভাটারা জোনের সহকারী কমিশনার আশরাফুল করিম জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরেই এই দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। সেই জের ধরেই সংঘর্ষ হয়। পুলিশ জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে বেরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য রহমতউল্লাহ এর পক্ষের কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই রেষারেষি চলছিল। রবিবার বাড্ডায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কামরুজ্জামান দুখু নিহত ও অপর ৭ জন গুলিবিদ্ধ হন। তারা এখনও এ্যাপেলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত দুখু ছিলেন ভাটারা থানার বেরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ভাই।
×