ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মাধবপুরে জোর করে গর্ভপাতে ধর্ষিতার মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২৭ অক্টোবর ২০১৭

মাধবপুরে জোর করে গর্ভপাতে ধর্ষিতার মৃত্যু

সংবাদদাতা, মাধবপুর, হবিগঞ্জ, ২৬ অক্টোবর ॥ মাধবপুরে ধর্ষণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা আদিবাসী যুবতীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার সুরমা চা বাগানের রেঙ্গু টিলা বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে। হতভাগা আদিবাসী তরুণী উপজেলার রেঙ্গু টিলা এলাকার মৃত সমরা মুন্ডার মেয়ে রিতা মুন্ডা (২০) । এ ঘটনা সুরমা চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন সাধারণ শ্রমিকরা । খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করে। নিহতের মা অলকা মুন্ডা জানান, সুরমা চা বাগানের এমরান হোসেন নামে জনৈক ব্যক্তি প্রায় ১০ বছর আগে তার কিশোরী কন্যা রিতা মুন্ডাকে গৃহকর্মীর কাজ দেয়ার কথা বলে উপজেলার কাশিমপুর গ্রামে তার বোনের বাড়িতে নিয়ে যায়। প্রথম দুই মাস মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারলেও এরপর নিয়মিত মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারত না। এমরানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলত তাদের মেয়ে ভাল আছে। গত বুধবার দুপুরে রিতা মুন্ডাকে অসুস্থ অবস্থায় অপরিচিত দুই মহিলা সিএনজি চালিত একটি অটোরিক্সা দিয়ে রেঙ্গু টিলায় নিয়ে আসে। এ সময় চা বাগানের লোকজন রিতার এমন অবস্থা কিভাবে হয়েছে জানতে চাইলে তারা কিছু বলতে পারেনি। পরে অপরিচিত দুই মহিলাকে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় আটক করা হয়। খবর পেয়ে এমরান রেঙ্গু টিলায় গিয়ে রিতার চিকিৎসা করাবে এ কথা বলে দুই মহিলা নিজেদের আত্মীয় বলে চা শ্রমিকদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় রিতা তার মাকে জানান, তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাশিমপুরে ধর্ষণ করা হয়। এক পর্যায়ে রিতা কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে জোরপূর্বক তাকে গর্ভপাত করানো হয়। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোন হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়নি। রিতার চিকিৎসার জন্য মা অলকা মুন্ডা সুরমা চা বাগান ১০ নম্বর ডিভিশনের চা বাগান পরিচালিত হাসপাতালে গেলে কমপাউন্ডার সন্তোষ মুন্ডা, লিটন সাঁওতাল ও দাত্রি মরিয়ম বেগম তার বাড়িতে যায়। কিন্তু রিতা চা বাগানের নিয়মিত শ্রমিক না হওয়ায় তারা তার কোন চিকিৎসা করেনি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এমরান হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সুরমা চা বাগানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গাফফার খান এ বিষয়ে ভাল বলতে পারবেন। গাফফার খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রিতার বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই।
×