ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি খাটো করে দেখছেন না ট্রাম্প

শক্তি প্রয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র!

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১২ আগস্ট ২০১৭

শক্তি প্রয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র!

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ সপ্তাহের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার প্রতি যে কঠোর হুঁশিয়ারি বাণী উচ্চারণ করেছেন গত বৃহস্পতিবার নিউজার্সির গলফ ক্লাবে সমবেত সাংবাদিকদের কাছে তিনি তার পুনরুল্লেখ করেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘ফায়ার, ফিউরি ও আগে তিনি বলেছিলেন, ফায়ার, ফিউরি ও পাওয়ার’ দিয়ে উত্তর কোরিয়ার হুমকির জবাব দেয়া হবে। সিএনএনও ওয়াশিংটন পোস্ট। সাংবাদিকদের সঙ্গে দীর্ঘ সাক্ষাতকারের সময় ট্রাম্প, ওবামা প্রশাসনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, বিগত প্রশাসন উত্তর কোরিয়াকে কাবু করার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, অথচ তা করা কঠিন কিছু ছিল না। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি যুদ্ধে আগে থেকেই জড়িয়ে গিয়েছিল। সেগুলোর মধ্য আফগান যুদ্ধ, ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেস্ট জঙ্গী ও আসাদবিরোধী অভিযান। সবকিছু মিলিয়ে ওবামা হয়তো উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে নতুন কোন জটিল পরিস্থিতিতে জড়াতে চাননি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার উপদেষ্টা ও সময়রবিদদের নিয়ে উত্তর কোরিয়াকে শিক্ষা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যেই বেশকিছু পন্থা অবলম্বনের কথা ভাবছেন। প্রথমদিকে উত্তর কোরিয়া সমস্যা সমাধানে প্রধানত : চারটি বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল। প্রথমত, কোন কিছু না করে দেশটিকে উপেক্ষা করা, দ্বিতীয়ত, দেশটির ওপর কঠোরতর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, তৃতীয়ত, আলোচনায় বসার জন্য চাপ সৃষ্টি করা এবং সর্বশেষ পন্থা হচ্ছেÑ সামরিক শক্তি প্রয়োগ করা। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, সর্বশেষ পন্থা ছাড়া আর কোন বিকল্প কারও সামনেই খোলা নেই। উভয়পক্ষ থেকেই সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের উস্কানিমূলক তৎপরতায় আলোচনার কোন অবকাশ নেই। আর যদি কোন ব্যবস্থাই না নেয়া হয়, হয়তো উত্তর কোরিয়ার আস্ফালন আরও সীমা ছাড়িয়ে যাবে। কেননা, এর আগে বেশ কয়েকবার জাতিসংঘের পক্ষ থেকে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিলÑ কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের মাধ্যমে দেশটিকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আলোচনার টেবিলে আনতে চেয়েছিলেনÑ কিন্তু দেশটির অনড় মনোভাবের জন্য সে উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র সামরিক অভিযান, নিষেধাজ্ঞা অথবা অন্য কোন ধরনের চাপ সৃষ্টি করলেÑ দেশটি লজ্জাকর পরাজয় ও চরম ধ্বংসের মধ্যে পতিত হবে। কেসিএনএ থেকে আরও বলা হয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামের উপকূল লক্ষ্য করে চারটি মাঝারি পাল্লার হোসাং-১২ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পরিকল্পনা করেছে। যা দ্বীপটির ২৫ কিলোমিটার দূরে সাগর বক্ষে পতিত হবে। এ গুয়াম দ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নৌঘাঁটি ও এ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি রয়েছে। এ বিমানঘাঁটি থেকে মাঝে মাঝে বি-১ বোমারু বিমান উত্তর কোরিয়ার আকাশসীমায় চক্কর দিয়ে আসেÑ যাতে পিয়ংইয়ংয়ের যুদ্ধবাজ নেতাদের গাত্রদাহ আরও বেড়ে যায়। এদিকে ট্রাম্প গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকিকে মোটেও হাল্কাভাবে দেখছেন না। তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, ম্যাক মাস্টার ও নবনিযুক্ত হোয়াইট হাউস প্রধান জন কেলির সঙ্গে বৈঠকের পর বলেন, দেখি সে (কিম জংউন) গুয়াম দ্বীপ নিয়ে কী করে, কতটুকু যেতে পারে। যদি সে কোন ঝামেলা পাকায় তবে এমন কিছু করব যা এর আগে কেউ দেখেনি- তোমরা দেখে নিও এবং সে তো (কিম জং উন) দেখবেই। এ অঞ্চলে সম্ভাব্য যুদ্ধের বিস্তার রোধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত সাগরীয় মিত্র দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট যোগাযোগ অব্যাহত আছে। জাপানের নবনিযুক্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইতসুনোরী উনোদেরা গত বৃহস্পতিবার বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুসারে আমাদের ভূ-খ-ের ওপর দিয়ে কোন ক্ষেপণাস্ত্র গুয়াম লক্ষ্য করে ছোড়া হলে আমাদের প্যাট্রিয়ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা তা ধ্বংস করতে পারি। যুক্তরাষ্ট্র জাপানকে ইতোমধ্যেই প্যাট্রিয়ট পিএসি-৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে।
×