ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিআইবিএমের কর্মশালায় বক্তারা

মূলধন ঘাটতি মোকাবেলা ব্যাংকিং খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ১৯ মে ২০১৭

মূলধন ঘাটতি মোকাবেলা ব্যাংকিং খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের মূলধনের অবস্থা খুবই খারাপ, ক্রমশ তা কমছে। ফলে সার্বিকভাবে ব্যাংকিং মূলধন পর্যাপ্ততার অনুপাত বিগত বছরের তুলনায় কমছে। আবার সর্বশেষ হিসাবে, সঞ্চিতি ঘাটতি রয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এ কারণে মূলধন ঘাটতি আরও বেড়ে যাবে। এ ঘাটতি মোকাবেলা ব্যাংকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন এ খাতের বিষেজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটরিয়ামে ‘ট্রেজারি অপারেশনস অব ব্যাংকস-২০১৬’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এ মন্তব্য করেন। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ বিআইবিএমের পরিচালক ড. শাহ মোঃ আহসান হাবীব, এনআরবি ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হোসেন, দ্য সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মঈনুদ্দিনসহ সরকারী-বেসরকারী ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তারা। মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১৬ সালে খেলাপী ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। যা আন্তর্জাতিক হিসাবের তুলনায় দ্বিগুণ। পুনঃতফসিল নীতিমালায় ছাড় দেয়ার কারণে খেলাপী ঋণ ব্যাপক হারে বাড়ছে। এছাড়া আরও কিছু কারণে ব্যাংকিং খাতের জন্য খেলাপী ঋণ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৩ সালে খেলাপী ঋণ বৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তিন বছরের মধ্যে ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। এভাবে খেলাপী ঋণ বাড়াকে ব্যাংকিং খাতের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। কর্মশালায় বক্তারা বলেন, খেলাপী ঋণ ব্যাংকিং খাতের বর্তমান দৈন্যদশার মূল কারণ। এ খেলাপী ঋণের কারণেই সুদের হার এখনও সাধারণের নাগালের বাইরে। একই সঙ্গে ভাল ঋণগ্রহীতারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে ব্যাংকগুলোকে খেলাপী ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ তদারকি করতে হবে। বিআইবিএমের মহাপরিচালক বলেন, খেলাপী ঋণ ব্যাংকিং খাতে সর্বনাশ ডেকে আনছে। এ অবস্থার উত্তরণ না হলে পুরো ব্যাংকিং খাতের জন্য চরম খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। এ ধরনের ঋণের কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাংকগুলো ভাল গ্রাহকদের কাছ থেকে চড়া সুদ নিচ্ছে। এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের আরও সতর্ক হতে হবে। সব ব্যাংকের প্রধানদের ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নজর না দিলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার ব্যাংকিং খাত নিয়ে ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদলায় যা এ খাতের জন্য মঙ্গলজনক নয়। সরকারকে বছরের প্রথমেই একটি নক্সা তৈরি করে এগুলে ব্যাংকের জন্য সুফল বয়ে আনবে। কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান মেহেদি জামান, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান আরিকুল আরিফিন প্রমুখ।
×