ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এক ব্যক্তির জন্য পদ্মা সেতু থেকে সরে যায় বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

এক ব্যক্তির জন্য পদ্মা সেতু থেকে সরে যায় বিশ্বব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একজন ব্যক্তির স্বার্থে আঘাত লাগায় মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গিয়েছিল। দুর্নীতির মিথ্যা অপবাদ মাথায় নিয়ে একজন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। অন্যায়ভাবে একজন সচিবকে এক বছর জেল খাটতে হয়েছে। আমি মনে করি, বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য এ ঘটনা অত্যন্ত লজ্জার। মঙ্গলবার রাজধানী শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। সভার শুরুতে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ১৪ ফেব্রুয়ারির একনেক সভাটি বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদে শততম সভা। ১০০ সভায় সভায় মোট ৭৩৩টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের সময় চলমান প্রকল্পের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৩৯টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৭টি প্রকল্পের কাজ সফলভাবে শেষ হয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সুফল দেশের মানুষ সুফল পাচ্ছেন। তিনি বলেন, একজন ব্যক্তির স্বার্থে আঘাত লাগল বলে, সেই ব্যক্তি দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতুর অর্থায়নে বাধা সৃষ্টি করলেন। যা হলে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হতে পারত। নির্ধারিত সময়ে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হলে এত দিনে তা শেষ হয়ে যেত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালেই পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়ে যেত। এখন যা প্রবৃদ্ধি আছে, তা আরও এক ভাগ বেশি হতে পারত। আমরা ৭ দশমিক ১১ ভাগ জিডিপি অর্জন করেছি। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হলে জিডিপিতে আরও এক পার্সেন্ট প্রবৃদ্ধি যোগ হয়ে শতকরা ৮ ভাগে উন্নীত করা সম্ভব হতো। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে গোটা বিশ্বের সামনে হেয়প্রতিপন্ন করতেই দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল। একই ঘটনায় সেই সময়কার যোগাযোগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে জেলে যেতে হয়েছিল। এসব ঘটনা ছিল দুঃখজনক। এসব ঘটনা সমাজে তাদের হেয় করেছে। তবে আজ সত্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকার বিষয়ে সরকারের পরবর্তী করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিশ্বব্যাংক কোন স্বর্গীয় প্রতিষ্ঠান নয়। বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশেরও অংশীদারত্ব আছে। কাদের যোগসাজশে দুর্নীতির এমন মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সেই কুশীলবদেরও খুঁজে বের করা হবে। এ সত্য একদিন ঠিকই বেরিয়ে আসে। আমরা চাই, পর্দার পেছনের ঘটনা সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত হোক।
×