প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাঙ্গেরি সফরে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। দেশ দুটি ভবিষ্যতে তাদের মধ্যকার ঐতিহাসিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে সহযোগিতার পাঁচটি ক্ষেত্র শনাক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকে ২০১৮ সালের মধ্যে কূটনৈতিক মিশন অথবা কনস্যুলেট অফিস খোলার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে নিমর্মভাবে হত্যা করার পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে কসুত স্কয়ারে হাঙ্গেরির পার্লামেন্ট ভবনে অনুষ্ঠিত প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে তারা দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করতে কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা এবং সরকারী পর্যায়ে আলোচনার বিষয়ে সহযোগিতার জন্য তিনটি চুক্তি করতে সম্মত হন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে উভয় নেতা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে দূরত্ব কোন বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। দুটি দেশই সহযোগিতার ক্ষেত্রে আন্তরিক। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাহসিকতার রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশের জনগণের সমৃদ্ধি ও কল্যাণে তার পরিবারের সংগ্রাম ও সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন। খবর বাসসর।
অরবান বলেন, হাঙ্গেরি থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব অনেক। তবে দেশটি আমাদের জন্য অনেক মূল্যবান এবং বাংলাদেশ থেকে অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাবার বিষয়ে আমাদের অনেক আগ্রহ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, তার দেশ একাধিক ক্ষেত্রে; বিশেষ করে পানি ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় এবং দেশটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, হাঙ্গেরি এই ভোগান্তি নিরসনে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে। শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়ায়ও অনুরূপ সমস্যা রয়েছে।
শেখ হাসিনা ভিক্টরের বক্তব্যের উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার যথাশীঘ্র সম্ভব ঢাকায় হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য এবং দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। ভিক্টর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থান ও জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা করে বলেন, কোন ধর্ম, জাতি অথবা জাতিগত মতের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক থাকতে পারে না, সন্ত্রাসীরা হবে নিগৃহীত।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাঙ্গেরি সফরে দুই দেশের সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। তিনি বলেন, বৈঠকে সহযোগিতার পাঁচটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। শহীদুল হক বলেন, গবেষণাসহ পানি ব্যবস্থাপনা খাতে সহযোগিতার জন্য একটি ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করা হবে। এছাড়াও দু’দেশ পানি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে গবেষণা ও প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাবিত তহবিলে সহযোগিতা করবে।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা বাড়ানোর ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করায় দুই নেতা এই খাতে নতুন নতুন প্রকল্প চালুর ব্যাপারে সম্মত হন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কৃষি খাতে দেশটির সম্ভাবনা তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের বিষয়টি উল্লেখ করেন। শহীদুল হক জানান, উভয় প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনের বিষয়ে জোরদারে সম্মত হন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আগামী বছর চিকিৎসা, প্রযুক্তি ও কৃষি বিজ্ঞানে পড়াশোনার জন্য দু’ শ’ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে পুর্ণাঙ্গ বৃত্তি দেবে হাঙ্গেরি এবং ভবিষ্যতে এটা অব্যাহত থাকতে পারে।
বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অন্যদিকে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন দেশটির অর্থনৈতিক কূটনীতিবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী লেভেন্তে ম্যাগইয়ার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্যান্ডর পিন্টার এবং কৃষিমন্ত্রী জসল্ট নেমেথ।
দুই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, পানি ব্যবস্থাপনা এবং কৃষিসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ও সাধারণ বিষয়াবলী নিয়ে বৃহত্তর পরিসরে আলোচনা করেন। বৈঠকের আগে দুই নেতা কিছু সময় একান্তে কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান ‘চেয়ার’ হিসেবে বাংলাদেশ আগামী মাসে ঢাকায় নবম ‘গ্লোবাল ফোরাম অব মাইগ্রেশন’ আয়োজন করতে যাচ্ছে এবং তিনি আশা করেন, হাঙ্গেরি ওই বৈশ্বিক আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে।
এর আগে, পার্লামেন্ট ভবনে এসে পৌঁছলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। এ সময় গার্ড রেজিমেন্টের একটি সুসজ্জিত দল শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়।
হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক ॥ বাংলাদেশে চিকিৎসা, প্রযুক্তি ও কৃষি বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বৃত্তি কর্মসূচী প্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ড. জানোস আদের। তার এ প্রস্তাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন দরজা উন্মোচন হলো। সোমবার হাঙ্গেরির সান্দর প্যালেসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ড. জানোস আদের এ প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বুদাপেস্টে পানি শীর্ষ সম্মেলন-২০১৬ তে অংশ নিতে চার দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে এখন হাঙ্গেরির রাজধানীতে অবস্থান করছেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক বৈঠকে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর আরবানের এই বৃত্তি কর্মসূচী ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
এছাড়াও প্রেসিডেন্ট আদের মৎস্যচাষ (পিসিকালচার) এবং জলজ উদ্ভিদ ও জীব-জন্তুর বংশ বিস্তারের (এ্যাকুয়াকালচার) ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করবেন। এছাড়াও আদের বলেন, পানি পরিশোধন ও বন্যা আক্রান্ত এলাকায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় হাঙ্গেরি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ প্রস্তাবে হাঙ্গেরির সঙ্গে সহযোগিতার নতুন দরজা উন্মোচিত হলো। এম শহীদুল হক বলেন, সোমবার বিকেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট প্যালেসে পৌঁছলে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ড. জানোস আদের এসে তাকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে হাঙ্গেরির সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে হাঙ্গেরি নতুন কিছু করতে আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে হাঙ্গেরির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে একটি নতুন মাত্রা গড়ে উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু হঠাৎ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর এ সম্পর্ক ভেঙ্গে যায় এবং আমরা সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে এসেছি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, একজন বিশ্বনেতা হিসেবে পানি সমস্যা নিয়ে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের ভবিষ্যত প্রভাব ও দুর্যোগ এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার মতো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রেসিডেন্ট আদের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ঠেকাতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় তার সরকারের সম্ভাব্য সহায়তার বিষয়ে জানতে চান।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা বাড়লে বাংলাদেশের ঝুঁকি এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দুই মিটার বেড়ে গেলে দুই থেকে আড়াই কোটি লোকের বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণার কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী সবুজ বেষ্টনী প্রকল্প, বনায়ন কর্মসূচী ও বাস্তুচ্যুত লোকজনের জন্য উঁচু ভূমিতে বাড়িঘর নির্মাণসহ জলবায়ু সহিষ্ণু তহবিলের আওতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্ভাবনী স্কিমের ব্যাপারে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টকে ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব প্রকল্প সম্পর্কে সরাসরি অভিজ্ঞতা অর্জনে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন এবং তার সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, শেখ হাসিনা বিনিয়োগ, আইসিটি ও জাহাজ নির্মাণ খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা সম্পর্কে আদেরকে ব্রিফ করেন। পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক সহায়তার বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সাড়া বা সহায়তার জন্য অপেক্ষার পরিবর্তে দ্বিপক্ষীয়ভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাহায্য বা অনুদানের চেয়ে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও উদ্ভাবনী ধারণা বিনিময়ের ক্ষেত্রে দুই দেশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, উভয় নেতা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক সহায়তার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার হাঙ্গেরির রাজধানীতে শুরু হওয়া পানি সম্মেলন-২০১৬ এর ফাঁকে মরিশাসের প্রেসিডেন্ট আমিনাহ গারিব-ফাকিমের সঙ্গে বৈঠক করেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ফাকিম মরিশাসে কর্মরত বাংলাদেশী অভিবাসীদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিফ করেন। তারা বিনিয়োগের বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রেসিডেন্ট ফাকিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন যে, মরিশাসে তৈরি পোশাক খাতে অনেক বাংলাদেশী নাগরিক কর্মরত রয়েছেন এবং কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের অবস্থা দেখতে এসব কারখানা পরিদর্শন করেছেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মরিশাসে বাংলাদেশী শ্রমিকরা অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের চেয়ে অনেক বেশি উপার্জন ও উন্নত জীবনযাপন করছেন। সকালে প্রেসিডেন্ট আদেরের সঙ্গে শেখ হাসিনা ‘টেকসই পানি সমাধান প্রদর্শনী’ পরিদর্শন করেন। তিনি এ সময় নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও পানি পরিশোধন প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেন।
জাতীয় বীরদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সিটি পার্কের ‘হিরোস-স্কয়ার’-এ হাঙ্গেরির জাতীয় বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে হাঙ্গেরি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারী বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় সেখানে সম্মান প্রদর্শনের স্মারক হিসেবে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের সরকারী সফরে রবিবার হাঙ্গেরি পৌঁছেন। এটাই হচ্ছে হাঙ্গেরিতে বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের কোন নেতার প্রথম সফর। হিরোস স্কয়ার হচ্ছে বুদাপেস্টের একটি অন্যতম ঐতিহাসিক স্থান, যা মাগিয়ার সাত নেতার প্রতিমূর্তি সংবলিত কমপ্লেক্স ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতাসহ অজানা সৈন্যদের সমাধিস্থল হিসেবে বিখ্যাত।
ঢাকা-বুদাপেস্ট তিনটি সমঝোতা স্মারক সই ॥ বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরি কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা তথা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। মঙ্গলবার সকালে হাঙ্গেরির পার্লামেন্ট ভবনে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে এই চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়। খবর বাসসর।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পানি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত প্রথম সমঝোতা স্মারকটিতে স্বাক্ষর করেন হাঙ্গেরির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেন্ডর পিন্টার এবং বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সংলাপ ও বাণিজ্য সংক্রান্ত দ্বিতীয় সমঝোতা স্মারকটিতে স্বাক্ষর করেন হাঙ্গেরির অর্থনৈতিক কূটনীতিবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী লেভেন্তে ম্যাগইয়ার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহীদুল হক।
কৃষি খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটিতে স্বাক্ষর করেন হাঙ্গেরির কৃষিমন্ত্রী জসল্ট নেমেথ এবং বাংলাদেশের কৃষি সচিব মোহাম্মদ মইনুদ্দিন আবদুল্লাহ।
শেখ হাসিনা-অরবান আনুষ্ঠানিক বৈঠক
বাংলাদেশ হাঙ্গেরি সহযোগিতা ॥ নতুন মাত্রা
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: