ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হিলারির ই-মেইল নিয়ে এফবিআই তদন্তের নতুন উদ্যোগে নির্বাচনী প্রচারে নতুন মাত্রা

উজ্জীবিত ট্রাম্প, ডেমোক্র্যাটরা হতাশ

প্রকাশিত: ০৪:১২, ৩০ অক্টোবর ২০১৬

উজ্জীবিত ট্রাম্প, ডেমোক্র্যাটরা হতাশ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে শুক্রবার নতুন বিস্ময় যুক্ত হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এদিন জানায়, তারা ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ই-মেল সার্ভারে নতুন কিছু ই-মেল পেয়েছে। তারা ইতোপূর্বের তদন্তের অংশ হিসেবে ই-মেলগুলো খতিয়ে দেখছে। হিলারির আবার এই ই-মেইল সংক্রান্ত সমস্যা থেকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারে নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে সুবিধা নিতে চাইছেন। অন্যদিকে, প্রচারের শেষ সময়ে এসে এফবিআইয়ের কর্মকা-ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। তবে হিলারি বলেন, তিনি ‘আস্থাশীল’ যে, তার ই-মেল নিয়ে এফবিআইয়ের নতুন তদন্তে নতুন কিছু পাওয়া যাবে না এবং তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না। খবর ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল, বিবিসি ও ইয়াহু নিউজের। ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ই-মেল সংক্রান্ত তথ্য অবিলম্বে প্রকাশ করতে এবং মার্কিন জনগণকে ব্যাখ্যা দিতে এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির প্রতি আহ্বান জানান। কংগ্রেসের উভয় দলের নেতাদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে কোমি জানান, হিলারির ই-মেলের বিষয়ে তার দফতর যে তদন্ত চালাচ্ছিল, তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয় এমন এক তদন্তের সময় তারা এমন কিছু ই-মেলের খোঁজ পেয়েছেন, যা আগের তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তিনি আরও জানান, এ নতুন তথ্যের সন্ধান পাওয়ায় তিনি মনে করেন, তার দফতরের উচিত হবে, পর্যালোচনা করে দেখা এসব ই-মেলে ‘গোপন’ কোন তথ্য ছিল কি না। এফবিআইয়ের তদন্তের সঙ্গে এ নতুন তথ্যের কোন সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা, সেটিও তারা খতিয়ে দেখবেন। তিনি বলেন, নতুন পাওয়া ই-মেলে কোন গোপন তথ্য থাকলে তারা তদন্ত শুরু করবেন। কোমি বলেন, এসব ই-মেল গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে কিনা, তা এখনও আমি বুঝতে পারছি না এবং অতিরিক্ত কাজ শেষ করতে কত সময় আমাদের লাগবে তার পূর্বানুমান করতে পারছি না। কোমি ইতোপূর্বের তদন্তের পর হিলারির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনার সুপারিশ না করলেও ট্রাম্প বার বারই বলেছেন, রিপাবলিকান প্রার্থীর ই-মেল সংক্রান্ত কর্মকা- অপরাধের শামিল এবং তাকে হোয়াইট হাউসের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত। শুক্রবার তিনি মেইন, আইওয়া ও নিউ হ্যাম্পশায়ারের সমাবেশগুলোতে রিপাবলিকানরা এই সুর আরও উচ্চকিত করেন। ট্রাম্প মেইনের লিসবনে সমর্থকদের বলেন, ওয়াটারগেটের পর এটি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি এবং আমি নিশ্চিত যে, এ ঘটনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারব। ১৯৭০’র দশকে এই কেলেঙ্কারির কারণে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন পদত্যাগে বাধ্য হন। ট্রাম্প সমর্থকদের বলেন, আমরা সবাই আশা করছি, বিচার পুরোপুরি সম্পন্ন করা হবে। সমর্থকরা এ কথা বলার পর উল্লাসে ফেটে পড়ে এবং বলতে থাকে, ‘হিলারিকে জেলে ঢোকাও।’ আইওয়াতে ট্রাম্প বলেন, ই-মেলের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অপরাধ সংঘটিত না হলে এফবিআই এই মুহূর্তে এ ইস্যু কখনও নতুন করে সামনে আনত না। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তিন মাস আগে তদন্ত স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া ও মামলা না করতে বিচার দফতরকে সুপারিশ করায় ট্রাম্প বার বার এফবিআই পরিচালকের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু এবার তিনি তার সুর নরম করে বলেন, এই মহা ভুল শুধরে নেয়ার সাহস দেখানোয় আমি তাদের কৃতিত্ব দিচ্ছি। ট্রাম্প গত কয়েক সপ্তাহে নির্বাচনে ‘জালিয়াতি ব্যবস্থা’র বিষয়ে কথা বলেছেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের ম্যানচেস্টারে শুক্রবার তিনি বলেন, আমি যতটা জালিয়াতির কথা ভেবেছিলাম ততটা হয়ত হবে না। নারীদের সমর্থন হারাচ্ছেন ট্রাম্প ॥ যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে নারীদের সমর্থন হারাতে শুরু করেছেন রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসোসের শুক্রবার প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, এতে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে তার জনসমর্থনের ব্যবধান আরও বেড়েছে, হিলারির চেয়ে ছয় পয়েন্ট পিছিয়েছেন তিনি। ২১ থেকে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে করা এ মতামত জরিপে দেখা গেছে, জনগণের ৪২ শতাংশ ইতোমধ্যে হিলারির পক্ষে ভোট দিয়েছেন অথবা আসছে ৮ নবেম্বর তাকে ভোট দেয়ার প্রত্যাশা করছেন; অপরদিকে ৩৬ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। আগের সপ্তাহে ট্রাম্পের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়েছিলেন হিলারি।
×